ভোটযুদ্ধে কমলো ঢাকার বায়ুদূষণ
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যে যাই বলুক না কেন, ভোটের দিনটা কিন্তু ঢাকার বাতাসের জন্য রীতিমতো আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
শনিবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সে (একিউআই) রাজধানী ঢাকার স্কোর ১৬৭। অথচ গতকাল শুক্রবার বায়ুদূষণের স্কোর ছিল ৩১৩। অর্থাৎ একদিনে দূষণের মাত্রা কমেছে ১৪৬ ধাপ!
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষ্যে শুক্রবার রাত ১২ টা থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল রাজধানীতে। আর এই নির্বাচনী হাওয়ায় শেষ পর্যন্ত কমে গেল এই শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা।
টানা ২০ দিনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে অবশেষে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই ২০ দিন উচ্চস্বরে গান, নির্বাচনী ভাষণ, বক্তৃতা আর পোস্টার-লিফলেটের ছড়াছড়িতে দূষণের কবলে পড়ে এই শহরের বায়ু, শব্দ, পানি।
একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে, স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসাবে বিবেচিত হয়। যার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে নগরবাসী।
এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ্য রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
অন্যদিকে একিউআই স্কোর ৩০০ এর বেশি হলে বাতাসের মান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং সমস্ত মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারেন। এর মানে হলো- এই শহরের বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’।
অপরদিকে একিউআই সূচকে ৫০ এর নিচে স্কোর থাকার অর্থ হলো বাতাসের মান ভালো। সূচকে ৫১ থেকে ১০০ স্কোরের মধ্যে থাকলে বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য বলে ধরে নেয়া হয়। আর সূচকের স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হওয়ার অর্থ হলো বাতাসের মান সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর।
মাত্রাতিরিক্ত মানুষের বসবাসের নগরী ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বাতাসে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। বর্ষাকালে কিছুটা উন্নতি হতে দেখা গেলেও গ্রীষ্ম ও শীতকালে শহরটিতে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।
প্রসঙ্গত, একটি নির্দিষ্ট শহরের প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে একিউআই সূচক তৈরি করা হয়। যার মাধ্যমে একটি শহরের বাতাস কতটুকু বিশুদ্ধ বা দূষিত এবং সেই সাথে ওই পরিস্থিতিতে কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে সেই তথ্য দেয়া হয়।
তবে নির্বাচনী হাওয়ার কারণে হঠাৎ ব্যতিক্রম দেখা গেল এই শহরের বাতাসে। তাই নির্বাচন নিয়ে যতই আপত্তি আর হতাশা থাকুক না কেন, রাজধানী ঢাকার বাতাসের জন্য যেন শাপে বর হয়ে এল ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন।