ভ্যাকসিন নিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ
জানুয়ারির শেষে কিংবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন পাওয়ার সব আয়োজন, প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে রাখলেও ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় মুহূর্তেই সব হিসাব-নিকাশ উলট-পালট হয়ে গেছে, নিশ্চয়তা পরিণত হয়েছে আশাবাদে। এই আশাবাদের পেঁছনে বড় যুক্তি দু'টি- সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তিটি আন্তর্জাতিক, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাইকমিশন কর্মকর্তাদের মৌখিক আশ্বাস।
রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবর পাওয়ার পর থেকে দফায় দফায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত হলেও তা আগের ঘোষণা অনুযায়ী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া যাবে কি-না, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজেই। আলোচনা করে অগ্রগতি জানতে আরও দু-চারদিন সময় চেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ কবে ভ্যাকসিন পেতে পারে, তা কোভিশিল্ড বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশকে জানাবে সেরাম ইনস্টিটিউট। অথচ জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে ভ্যাকসিন পাওয়ার পর ২৫ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে ভ্যাকসিনেশন মিশনের প্রস্তুতি শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সময়মতো ভ্যাকসিন পাওয়া না গেলে থমকে যেতে পারে সে মিশনও।
রোববার রাতে বার্তা সংস্থা এপিকে সিরাম ইনস্টিটিউট জানিয়েছে ফেব্রয়ারি পর্যন্ত তারা শুধু ভারতে ভ্যাকসিন দেবে। মার্চের আগে ভ্যাকসিন রপ্তানি করতে পারবে না। এতে বাংলাদেশেরও সময়মত ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা ধোঁয়াশায় রূপ নিয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের সঙ্গে সিরাম ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন আনার চুক্তি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বেক্সিমকোও নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি কবে ভ্যাকসিন আসবে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'কবে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, তা এখন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ সমস্যাটি নতুন করে তৈরি হয়েছে। গতকালও আমরা নিশ্চিত ছিলাম ভ্যাকসিন পাবো। আজ শুনলাম ভারত সরকার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।'
সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে, ভারত আমাদের সাথে যে এগ্রিমেন্ট করেছে সেটি ইমপ্লিমেন্ট হবে। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যেও বাংলাদেশকে প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাই কোন ধরণের ব্যান এটির ওপর ইফেক্টিভ হবেনা। তাই আমাদের চিন্তার কারণ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে। সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তার নিজস্ব বক্তব্য, প্রিম্যাচিউরড বক্তব্য। এটি ভারত সরকারের পলিসি না।
চুক্তি ও আলোচনায় আশ্বস্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভারত সরকারের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা সব দেশের জন্য প্রযোজ্য হলেও সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকো ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরিত ত্রি-পক্ষীয় চুক্তিকে 'আন্তর্জাতিক চুক্তি' অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাওয়ার আশাবাদের কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এ ধরণের চুক্তিকে অনার করার বাধ্যবাধকতা ভারতের রয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে ভ্যাকসিন পাওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, সেটি বিলম্বিত হতে পারে কি-না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'এ বিষয়টি এখনই বলতে পারব না। আজকেই যেহেতু সমস্যার কথা জানলাম। আমাদের ২-৪ দিন সময় দেন। এর মধ্যে আলোচনা করে অগ্রগতি জানতে পারলে জানাবো।'
'চুক্তি অনুযায়ী ডব্লিউএইচও'র অনুমোদনের পর সেরাম বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেবে। সেরাম এখন ডব্লিউএইচও'র কাছে আবেদন করবে। অনুমোদনের পর সেরাম আমাদের জানাবে যে, আমরা কবে পাব। তখন আপনাদের জানাতে পারবো'- যোগ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সকাল থেকে ভারতীয় হাইকমিশন ও বেক্সিমকোর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমাদের ফরেন মিনিস্ট্রির ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সব জায়গা থেকেই তারা আমাদের জানিয়েছে যে, আমাদের আশাহত হওয়ার কিছু নেই। চুক্তি অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন পাব।
ভারত আমাদের ভ্যাকসিন দেবে, এটা শুধু আমাদের প্রত্যাশা নয়। তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের চুক্তি আছে। এখন যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা ভারতের সমস্যা, আমাদের নয়। এ ধরণের আন্তর্জাতিক চুক্তি অনার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
জিটুজি নাকি জিটুজি নয়
স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নান দুপুরে বলেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এই মাত্র আমি ঢাকায় ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে টাকা যাবে, ভারতের দেওয়া ব্যাংক গ্যারান্টি সবই জি২জি ভিত্তিতে হয়েছে।
ভারত বাণিজ্যিক রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, আমাদের ক্ষেত্রে নয়। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি জি২জি। এক্ষেত্রে ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
তিনি বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বাংলাদেশকে তিনকোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলেছেন। তার অর্থ হলো, বাংলাদেশ যে সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা আনবে, সেটি ভারতের প্রধানমন্ত্রীও জানেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারও উপস্থিত ছিলেন।
ফেব্রুয়ারির মধ্যে টিকা পাওয়ার আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সেরাম ডব্লিউএইচও অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করবে। অনুমোদন পেতে ৩ সপ্তাহ সময় লাগে। তিন সপ্তাহ পর ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। তাই ভ্যাকসিন পেতে দেরি হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। দুঃচিন্তাগ্রস্ত হওয়ারও কিছু নেই।
গত বছরের ৫ নভেম্বর, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি বেক্সিমকোর সঙ্গে চুক্তি করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ওই চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সেরামের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ কিনবে। প্রথম ধাপে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে রপ্তানি করবে সেরাম।
স্বাস্থ্য সচিব অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন নিয়ে চুক্তি জিটুজি বললেও বেক্সিমকো বলেছে এটি জিটুজি না।
বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের ব্যবস্থপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, এটি ত্রিপাক্ষিয় চুক্তি। সচিব জিটুজি কিভাবে বলেছে আমি জানিনা। এই চুক্তির সঙ্গে ইন্ডিয়া সরকারের সম্পৃক্ততা নেই। এটা প্রাইভেট চুক্তি।
'স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আলাদা ভাবে অক্সফোর্ডের সাথে চুক্তি করেছে কিনা, তা আমার জানা নেই'- জানান পাপন। স্বাক্ষরিত চুক্তিটি জিটুজি কিনা, সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও।
বাংলাদেশের অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন আনা হবে : বেক্সিমকো
নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আগে আমাদের ধারণা ছিলো জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে ভ্যাকসিন আসবে। এখন যেহেতু কথা উঠেছে, সরকারের কাছে আমার রিকুয়েস্ট অ্যাডভান্সের টাকা পাঠিয়ে দেয়া এবং নিয়ম মেনে তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেয়া। যত তাড়াতাড়ি এসব শেষ হবে, ততো দ্রুত আনা যাবে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন দেশে আনবে। বেক্সিমকোর সব কাজ শেষ, বাকিটা সরকারের ওপর নির্ভর করছে।
পাপন বলেন, ব্যাংক গ্যারান্টির কাগজ সরকারকে দিয়েছি। ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের জন্য সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছি। আমাদের আর কাজ নেই।
এগ্রিমেন্টে বলা হয়েছে অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে দিতে হবে। এটি শুধু দু'টা প্রাইভেট কোম্পানির বিষয় না। এর সঙ্গে সরকারও আছে।
রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমার ধারণা, ইন্টারপ্রেটেশনে কেউ ভুল করছে। কোথাও লেখা নাই এক্সপোর্ট করতে পারবে কিনা। তবে একটা ব্যান আসতে পারে।'
চুক্তি যেহেতু হয়ে গেছে, সমস্যা হওয়ার কোন কারণ নেই। ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিমেন্ট এখন পর্যন্ত কেউ লঙ্ঘন করেনি। তাই কোন সমস্যা হবে না আশা করছি।
টাকা চলে গেল সিরামের কাছে
ভারতের ভ্যাকসিন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আমদানির জন্য অর্ধেক মূল্য অগ্রিম হিসেবে ১২০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে পেমেন্ট করার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার বা আজ মঙ্গলবারের মধ্যে এ অর্থ সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ভারতের পক্ষ ইতোমধ্যে ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চীন-রাশিয়ার টিকা আনার আলোচনা চলছে
ভারত থেকে ভ্যাকসিন পাওয়া না গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্ল্যান 'বি' কি জানতে চাইলে সরাসরি কোন উত্তর দেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এখনও শেষ হয়নি। ট্রায়াল শেষে এগ্রিমেন্ট হতে পারে।
চীনের আনুই জিফেই লংকম বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের ট্রায়াল করার আবেদন করেছে। তাদেও ট্রায়ালের পারমিশন দেওয়া হবে কি-না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা চীনের রাষ্ট্রদূত দু'দিন আগে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তাদের টিকা কোন পর্যায়ে আছে, তার বিস্তারিত কাগজ-পত্র তার কাছে চেয়েছি। তারা সেগুলো দেওয়ার পর পর্যালোচনা করে পারমিশন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন মহাপরিচালকের দপ্তর বেক্সিমকো ফার্মা লি.-কে অক্সফোর্ড/ অ্যাস্ট্রাজেনেকা আবিষ্কৃত কোভিড-১৯ টিকা আমদানি এবং বিপণনের অনুমতি দিয়েছে।
সরকারি দপ্তরটির মুখপাত্র আইয়ুব হোসাইন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টিকা আমদানিতে এখন আর কোনো বাধাই রইলো না।
এরআগে, আজ সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলেই প্রতিষেধকটির স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। তারা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউডের সঙ্গে টিকাটি আমদানির চুক্তি করেছে।
'সিনোভ্যাকের ট্রায়ালের অনুমতি না দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল'
চীনের তৈরি 'সিনোভ্যাকের ট্রায়ালের অনুমতি না দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল,' বলে মন্তব্য করেছেন করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ডা. নজরুল ইসলাম।
দেশের এই শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন ট্রায়াল দিলে আমাদের ভ্যাকসিন পাওয়ার একটা সুযোগ থাকত। আর আমাদের ভ্যাকসিনের যদি ডিফারেন্ট সোর্স থাকত, তাহলে ভারতে এ রকম আচরণ করত না।'
ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, 'সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন ট্রায়ারের আবেদন করল, আমরা যাচাই-বাছাই করে তা বাদ দিলাম। আমরা বললাম, সিনোভ্যাক ট্রায়ালের জন্য টাকা চাচ্ছে; কিন্তু তারা তো শুরুতে টাকা চায়নি। ট্রায়ালের অনুমতি দিতে কযেকমাস দেরি হওয়ায় তারা অন্য দেশে ট্রায়ালে অর্থ ব্যয় করে ফেলেছে; তাই টাকা চেয়েছে।'
'সিনোভ্যাক আর অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের দুটো ধরন আলাদা। কিন্তু সিনোভ্যাকও তো কার্যকর ভ্যাকসিন। বিভিন্ন দেশে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ভ্যাকসিনের একটি সোর্সের ওপর নির্ভর করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এতদিন বলে এলেন, জানুয়ারিতে ভ্যাকসিন আসবে; এখন সে ভ্যাকসিন কবে আসবে বলা যাচ্ছে না।'
'মানুষকে এখন ভ্যাকসিনের আশায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করলে চলবে না, মাস্ক পরতে হবে,' জোরের সঙ্গে বলেন অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।