ভয় দেখিয়ে আমাদের দেশছাড়া করা যাবে না: পঙ্কজ দেবনাথ
বরিশাল-৪ আসনের সাংসদ ও সেচ্ছাসেবকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ এমপি বলেছেন, 'ভয় দেখিয়ে আমাদের দেশছাড়া করা যাবে না। মন্দিরে হামলা করে, দেবালয় ধ্বংস করে আমাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা যাবে না। আমরা এ দেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসি।
'দেশের মানুষ সরলপ্রাণ ধর্মবিশ্বাসী, কিন্তু যেসব দুর্বৃত্ত মন্দিরে হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ঘটাতে চায়, হিন্দুদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে আন্দোলন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।'
মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো পরিদর্শন শেষে রাধা মাধবজিউর মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ আরও বলেন, 'কোনো সভ্য দেশে এ বর্বরতা হতে পারে এটা আমাদের ভাবনায় ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমাদের দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছে। এ দেশ আমাদের, ভয় দেখিয়ে আমাদের দেশছাড়া করা যাবে না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি, এ দেশ আমাদের, আমরা এ দেশেই থাকব। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছি, এবার এ ধর্মীয় সন্ত্রাস নাশকতাকারীদের বিচার নিশ্চিত করব।'
পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরণ, হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ নোয়াখালী শাখার আহ্বায়ক বিনয় কিশোর রায়সহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীর নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে মূর্তির কোলে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় মুসল্লিরা। এর কিছুক্ষণ পর বাজারের কয়েকটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে একদল দুর্বৃত্ত।
হামলাকারীরা বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ব্যাপক ভাঙচুর করে। চৌমুহনী বাজারের কলেজ রোড ও ব্যাংক রোডে অবস্থিত বিজয়া সার্বজনীন, ইসকন মন্দির, খোত বাড়ি মন্দির, লোকনাথ মন্দির, দশভুজা মন্দিরসহ কয়েকটি মন্দিরে দফায় দফায় হামলা চালায় তারা।
এ সময় হামলাকারীদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে আক্রমণের শিকার হন বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান সিকদার, এসআই রুবেল মিয়াসহ অন্তত ৭-৮ জন পুলিশ সদস্য। হামলায় অন্তত ৩০জন আহত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ১৫৩ রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় যয়তন কুমার সাহা (৪২) ও প্রান্ত কুমার নবদেব (২০) নামের দুজন মারা যান।
এ হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ইসকন কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ১টি ও পুলিশ বাদী হয়ে ৪টি মামলা দায়ের করেছে। ৫টি মামলায় ৪৯জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।