মহামারি দীর্ঘায়িত হলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী ক্লাসে উঠে যাবে
করোনভাইরাস পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা কোনো পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী ক্লাসে উঠে যাবে।
তবে শিক্ষা মন্ত্রনালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় যদি ডিসেম্বরের আগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আবার খুলতে পারে; তাহলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষাগুলো সীমিতকারে অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এখন বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেদু) এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির দেওয়া সুপারিশগুলো বিশ্লেষণ করে দেখছে।
কোভিড -১৯ ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি আবার খোলা সম্ভব না হলে- জেএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা বাতিল করার সুপারিশ করেছে বেদু।
বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা গেলে তারা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা নিবেন।
'যদি অক্টোবর বা নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরু করতে পারি তবে এমসিকিউ এবং ভাইভা পরীক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নেবে। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ৫০ নম্বর থাকবে।'
'আর ডিসেম্বর মাসে গিয়ে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরের ক্লাসে উঠে যাবে। সবকিছু নির্ভর করছে মহামারি পরিস্থিতির ওপর,' তিনি আরও যোগ করেন।
'রোববার প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের পরিকল্পনা জমা দেব,' বলেন তিনি।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র শাহা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, তারা শিক্ষক এবং পাঠ্যপুস্তক বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে আজ (বুধবার) এক কর্মশালা শুরু করেছেন।
'আমরা একাডেমিক পাঠ্যক্রমকে সংক্ষিপ্ত করার কাজ করছি। তবে, একটা সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রম তৈরি করতে কমপক্ষে দুই মাস সময় প্রয়োজন আমাদের। মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নেবেন তারা পরীক্ষা নেবেন কি না,' তিনি বলেন।
শিক্ষার্থীদের অটো প্রমোশনের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, 'আমাদের কাজ হল পাঠ্যক্রম নিয়ে কাজ করা, পরীক্ষা আমাদের বিষয় না।'
তিনি বলেন, 'আসলে পাঠ্যক্রম সংক্ষিপ্ত করার কোনও সুযোগ নেই। আমরা আমাদের বিশেষজ্ঞদের মতামত শোনার পর এটা করব।'
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা) মাহবুব হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় সেরা সমাধানের লক্ষ্যেই কাজ করছে।
'পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এখন সিলেবাস কীভাবে সংক্ষিপ্ত করা যায় সে বিষয়ে কাজ করছে। আমরা এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে আমাদের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে আমরা খুব শিগগিরই একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারব,' বলেন তিনি।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠক করেছেন।
'আমরা বেদুর সুপারিশ এবং আমাদের কী করা উচিত তাই নিয়ে আলোচনা করেছি। কর্মকর্তারা এখন প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন। আমরা এ বিষয়ে তার কাছ থেকে নির্দেশনা চেয়েছি,' বলেন মাহবুব হোসেন।
সারা দেশে ১৩,০০,০০০ প্রাথমিক ও ৩০,০০০ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, প্রায় ৩০ লক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী সহ প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে।
১ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
সরকার সংসদ টেলিভিশন এবং রেডিওতে ধারণকৃত পাঠ সম্প্রচার করছে, তবে সবার ঘরে টেলিভিশন না থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারছে না।