লকডাউন না মেনে ঘরের বাইরে মানুষ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এরইমধ্যে দেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে কয়েকটি জেলায় চলছে লকডাউন। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় রোববার রাস্তায় মানুষের চলাচল তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহলের সময় রাস্তা ফাঁকা থাকলেও টহলরত গাড়ি চলে গেলে পূনরায় শুরু হয়েছে জটলা। অনেক এলাকায় ত্রাণের জন্যও মানুষকে ঘর থেকে বের হতে দেখা গেছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাগরিকদের ঘরে রাখতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট:
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামাজিকভাবে শুরু হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। তাই দ্রুত এলাকাভিত্তিক লকডাউন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
নগরে ঢোকা ও বের হওয়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও এখনো অভ্যন্তরীণ এলাকায় রোববার স্বল্প আকারে যানবাহন চলাচল করেছে। পাশাপাশি অনেক দোকানপাট চালু ছিল।
নারায়ণগঞ্জ
পঞ্চমদিনের মতো জেলায় লকডাউন চলছে। রোববার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালায় সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ব্যাংক, বাজারসহ ও ওএমএসের চালবিক্রির স্থানগুলোতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতা-বিক্রেতা যেন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করেন, সেটিও নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ঠাকুরগাঁও
জেলার কোনো কোনো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখা গেলেও কিছুক্ষণ পর আবার মানুষের কোলাহল বাড়তে দেখা গেছে।
জেলাপ্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, যারা লকডাউন মানছেন না, আমাদের টিম তাদের জরিমানা ও সতর্ক করছেন। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও সেনাবাহিনী জেলাশহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত টহল জোর করেছেন।
গাইবান্ধা
শুক্রবার বিকেল থেকে গাইবান্ধা লকডাউন করা হলেও তা মানছেন না মানুষ। কিছু কিছু এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় রাস্তায় জনসমাগম নিয়ন্ত্রিত থাকলেও অন্যান্য এলাকায় এ দিন জনসমাগম অব্যাহত ছিল। মানা হয়নি না সামাজিক দূরত্ব।
বিশেষ করে সকাল থেকে শহরের পাড়া মহল্লা ও হাটবাজারগুলো জমে ওঠে মানুষের ভিড়ে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়াও আড্ডা জমে দোকানগুলোতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
অন্যসব দিনের মতোই শহরের সড়কগুলো দিয়ে রিকশা ও মোটসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকলেও জনসাধারণের চলাচল বন্ধে খুব একটা তৎপরতা ছিল না তাদের। যদিও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে শহরজুড়ে থাকা ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি দেখলেই সরে পড়েছেন মানুষজন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেন, মানুষকে ঘরে রাখার জন্য পুলিশ সদস্যরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।
সুনামগঞ্জ
প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় রোববার বিকেল থেকে সুনামগঞ্জকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক আবদুল আহাদ জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত লকডাউন বহাল থাকবে।
নরসিংদী
লকাডউন অমান্য করে সড়কে ভিড় জমিয়েছে মানুষ। সড়ক, মহা-সড়কে চলেছে রিকশা, অটোরিক্সা ও প্রাইভেট যানবাহন। নানা অজুহাতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরহামেশাই সাধারণ মানুষ রাস্তায় চলে এসেছে।
তবে লকডাউন কার্যক্রম করতে কঠোর হয়েছেন জেলা পুলিশ। মোড়ে মোড়ে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি যানবাহন আটকে দিচ্ছে পুলিশ।