শ্রমিকের পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ
কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সুবিধা কেবল তৈরি পোশাক খাত কিংবা নারী শ্রমিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যাপকভাবে কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরামর্শও তাদের।
এ লক্ষ্যে বিদ্যমান শ্রম আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন, কারখানা পরিদর্শনকালে পুষ্টি কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিষয়টি চেক লিস্টে যুক্ত করা, কারখানা পর্যায়ে কার্যক্রম বাস্তবায়নকারীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করার উপর গুরুত্ব দেন তারা।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে 'ন্যাশনাল রাউন্ড টেবিল ডিসকাশান অন ওয়ার্কপ্লেস নিউট্রিশন ইন দ্য আরএমজি সেক্টর ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক এক আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে ওই সভার আয়োজন করে, যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
বিকেএমইএ এবং নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল এর উদ্যোগে দুই বছর ধরে চলা 'নিউট্রিশন অফ ওয়ার্কিং উইমেন' শীর্ষক প্রকল্পের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে ওই গোল টেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে কারখানা মালিক, শ্রমিক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী ছাড়াও বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
ইন্ট্রারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর তুয়োমো পৌতিয়ানেন, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। শ্রমিকের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে কারখানা পর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রমের লক্ষ্যে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যানের উপর গুরুত্ব দেন তিনি।
নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর সাইকা সিরাজ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা ও কারখানাগুলোর ফিডব্যাকের ভিত্তিতে সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তাদের এই কার্যক্রমে সহায়তা করায় সরকারের সহযোগিতার প্রশংসা করেন। ভবিষ্যতে আরো ব্যাপকভিত্তিক কাজ করার জন্য কানাডাসহ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া সহযোগিতা অব্যাবহ থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, নারী শ্রমিকদের ফোকাস করে কাজ করলেও পুরুষদেরও পুষ্টির প্রয়োজন। কেননা তারাও একই পরিবেশ থেকে আসে। 'কেউ একা এই কাজ করতে পারবে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে, যাতে সব কারকানার শ্রমিকরা এসব কার্যক্রমের সুবিধাভোগী হতে পারে' বলেন তিনি।
পুষ্টির বিষয়টিকে সরকারের অষ্ট পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পুষ্টির কার্যক্রমের অগ্রগতিতে ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আনুরোধ জানান। একই শ্রমিকের কল্যাণে কারখানা মালিকদের আরো সক্রিয় হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
বিকেএমইএ'র এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মালিকপক্ষ যে শ্রমিকের কল্যাণে সব সময় এগিয়ে এসেছে, এই নিউট্রিশন প্রোগ্রাম তার অন্যতম উদাহরণ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কারখানা মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা গত দুই বছরে বাস্তবায়ন হওয়া এই কার্যক্রমের উপর তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।