শ্রমিক ধর্মঘট: ভোমরা বন্দরে ট্রাকের জটে আমদানি বন্ধ, সাতদিনে রাজস্ব ক্ষতি ২০ কোটি
টানা সাতদিনেও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানিকারক ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটেনি। শ্রমিকরা মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বন্দরে বেঁধেছে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘজট। বন্দরে নতুন পণ্যবাহী কোন ট্রাক প্রবেশের জায়গা না থাকায় বন্ধ হয়ে পড়েছে ভারত থেকে আমদানি কার্যক্রম। বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত কোন পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেনি। এদিকে, গত ১ এপ্রিল থেকে আজ পর্যন্ত ভোমরা বন্দরে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ২০ কোটি টাকারও বেশি।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, 'শ্রমিকরা পহেলা এপ্রিল থেকে ধর্মঘট করছে। তারা এখনো কাজে যোগ দেয়নি। ভোমরা বন্দরে সাতশোটি পণ্যবাহী ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। বন্দরে জায়গা কম থাকায় ভারত থেকে নতুন কোন ট্রাক প্রবেশের সুযোগ নেই। সে কারণে আমদানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে'।
ভোমরা বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আকবর আলী জানান, 'প্রতিদিন ভারত থেকে ৩০০-৩৫০ পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করে। গত ১ এপ্রিল থেকে শ্রমিকরা ধর্মঘট করায় পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা কমতে থাকে। মঙ্গলবার ট্রাক প্রবেশ করেছে ৬০টা। বুধবার (৭ এপ্রিল) এখনো ভারত থেকে কোন ট্রাক প্রবেশ করেনি। প্রতিদিন কমপক্ষে তিন কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। তবে গত ছয়দিনে রাজস্ব আদায়ও কমেছে। সাতদিনে সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে আনুমানিক ২০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে'।
তিনি বলেন, ভারত থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে কোন সমস্যা নেই। তবে ভোমরা বন্দরে নতুন কোন ট্রাক প্রবেশের জায়গা না থাকায় আমদানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।
ভোমরা স্থলবন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, 'ট্রাক প্রতি লেবার ঠিকাদার একজন শ্রমিকের বিল দেন ৩৮০ টাকা। ৪০ টন পণ্য খালাসে এই টাকা খুব সামান্য। এতদিন ট্রাক প্রতি ৫০০-৭০০ টাকা বকশিস দিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। সেটিও দেওয়া ব্যবসায়ীরা বন্ধ করে দিয়েছেন। সে কারণে মজুরি কম পাওয়ায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখেছে'।
এ বিষয়ে ভোমরা স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকলে সাড়া দেননি।