সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতেও করোনামুক্ত বাগেরহাট জেলা কারাগার
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়তই বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা। লকডাউন, জরিমানা, মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রমেও কমানো যাচ্ছে না সংক্রমণ ও মৃত্যুহার। শহর থেকে গ্রাম সবখানেই করোনা রোগী ও স্বজনদের হাহাকার। এই পরিস্থিতিতেও করোনামুক্ত রয়েছে বাগেরহাট জেলা কারাগার। কারাগারে হাজতি প্রবেশের নিয়ম কানুন ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় করোনামুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাট জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাট জেলা কারাগারে ৬৫০ জন বন্দি রয়েছে। এর মধ্যে ৬২২ জন পুরুষ, ২৬ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে তাদের মায়ের সাথে। সাড়ে ছয়শ হাজতির বসবাস, প্রতিনিয়ত হাজতি বের হওয়া ও প্রবেশ করা এই প্রতিষ্ঠানটি করোনা মুক্ত থাকায় প্রশংসা কুড়িয়েছেন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের।
বাগেরহাট জেলা কারাগারের জেলার একেএম মাসুম বলেন, "কারাগার খুবই স্পর্শকাতর একটি জায়গা। এখানে প্রতিনিয়তই নতুন বন্দি আসেন, আবার মুক্তি পেয়ে চলে যান। অল্প জায়গায় অধিক মানুষের বসবাস এখানে। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এই কারাগারকে সংক্রমণ মুক্ত রাখতে আমরা সব ধরণের সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি। একজন বন্দি আসলে, আমরা প্রথমে তাকে হ্যান্ড সেনিটাইজার ও নতুন মাস্ক ব্যবহার করিয়ে ভিতরে প্রবেশ করানো হয়। সেখানে আলাদা একটি কক্ষে নিয়ে গোসল ও তার কাপড় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করানো হয়। পরে ১৪ দিনের জন্য আলাদা একটি জায়গায় কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ না হওয়ার আগে তাকে অন্য কারও সাথে দেখা করতে দেওয়া হয় না। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হলে, তাদেরকে ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। এছাড়াও করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আমরা বন্দিদের সাথে তাদের স্বজনদের দেখা সাক্ষাতের বিষয়টিও অনেক সতর্কতার সাথে করিয়েছি।"
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, "কারাগার একটি ঘনবসতী জায়গা। এখানে যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হবে।তাই প্রথম থেকেই এখানে প্রয়োজনীয় নিয়ম কানুন মানতে বলা হয়েছে। আমরা নিয়মিত কারাগার পরিদর্শনে যাচ্ছি। এখনও কোনো বন্দীর কো্নো উপসর্গ দেখা যায়নি।
নিয়মিত চিকিৎসক কারাগারে পরিদর্শন করেন। কর্তৃপক্ষকে করোনা সংক্রমণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান বলেন, "কারাগার পরিদর্শন করেছি। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের সাথে স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়ে একটি সভা করা হয়েছে। সরকারি নিয়ম নীতি মানার জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।সেখানে চিকিৎসকরা নিয়মিত পরিদর্শনও করছেন। কারাগার কর্তৃপক্ষের সতর্কতা ও যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলায় এখন পর্যন্ত করোনা মুক্ত রয়েছে।"