সাতক্ষীরা উপকূলে আবারও বাঁধে ভাঙন, পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের রেশ কাটতে না কাটতেই সাতক্ষীরার উপকূলীয় বাঁধ ভেঙে লক্ষাধিক মানুষ আবারও পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। নদীর প্রবল জোয়ারের চাপে রিং বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে চারটি ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম।
শুক্রবার সকালে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের লেবুগুনিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল ইসলাম জানান, কপোতাক্ষের প্রবল জোয়ারের তোড়ে লেবুগুনিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। সেই জায়গা এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করে আসার পর শুক্রবার বেলা ২টার দিকে তার পাশে দুটি স্থানে আবারও ভেঙে গেছে। লেবুগুনিয়া, চকবারা, গাবুরা ও খোলপেটুয়া চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিন'শ পরিবারের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফারী বলেন, গাবুরা এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের সময় পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। বাঁধ সংস্কারের জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। পানিবন্দী হওয়ার খবর আমাকে কেউ এখনো জানায়নি।
অন্যদিকে, আশাশুনিতে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী জানান, আম্ফানের পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানেরা বাঁশ দিয়ে রিং বাঁধ দিয়েছিলেন। সেই বাঁধ সবই ভেঙে গেছে জোয়ারের তোড়ে। কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়ন পুরোপুরি প্লাবিত। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখোলা এলাকায় ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাওনিয়া, হিজলিয়া, কোলা, চাকলা, হরিশখালি এলাকার বাঁধ ভেঙে গোটা এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ নির্বাহী প্রকৌশলী (শ্যামনগর) আবুল খায়ের বলেন, সংস্কারের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ নির্বাহী প্রকৌশলী (আশাশুনি) সুধাংশু জানান, চাকলা, হিজলা, কোলাসহ বিভিন্নস্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। চাকলা হিজলা ও কোলা এলাকায় বাঁধ সংস্কারের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যেহেতু বর্ষাকাল চলছে, সেজন্য সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেনি। কাজের পরিবেশ পাওয়া মাত্রই তারা বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেসব স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ অব্যাহত রেখেছে।