সিগন্যাল বাতিতে ফিরছে চট্টগ্রাম ট্রাফিক বিভাগ
হাতের ইশারা ও বাঁশির বদলে আবারও সিগন্যাল বাতিতে ফিরে আসছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।
প্রাথমিকভাবে নগরের আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডে সিগন্যাল বাতি ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে ট্রাফিক বিভাগ।
পর্যায়ক্রমে পুরো নগরের ট্রাফিক সিস্টেম আবারও বাতি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. আমির জাফর।
তিনি বলেন, “সিগন্যাল বাতিগুলো সচল করা হচ্ছে। আধুনিক ট্রাফিক সিস্টেম নিশ্চিতে সিগন্যাল বাতির বিকল্প নেই। এতে করে জনবল কম লাগবে। পাশাপাশি শৃংখলা ফিরে আসবে।”
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সিগন্যাল বাতিতে পুনরায় ফিরে আসার ফলে শৃংখলা আসতে পারে তবে সেটি স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কয়েক দশক আগে সড়কের যানবাহনের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে কারণ ওইসব বাতি স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এখন গাড়ি বেড়েছে। তাই নতুনভাবে ডিজাইন করে বাতি স্থাপন করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) সূত্র জানায়, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করে চসিক। মেরামতের কিছুদিন পর সিগন্যাল বাতিগুলো অকার্যকর হয় পড়ে।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “কয়েক বছর আগে একই উদ্যোগ নিয়েছিল ট্রাফিক বিভাগ। বিভিন্ন মোড়ে বাতি স্থাপন করে টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেছে এবং সেই অনুযায়ী ডিজাইন করে সিগন্যাল বাতি স্থাপন করতে হবে। নয়তো পুরোপুরি সুফল মিলবে না।”
পুলিশ কর্মকর্তা মো. আমির জাফর বলেন, “আমরা এখন নগরের প্রধান ও ব্যস্ততম মোড়গুলোর বাতি সচল করে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে ছয়টি মোড়ের বাতি সচল হয়েছে এবং সিগন্যাল বাতি দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ চলছে। ভবিষ্যতে প্রতিটি মোড়ে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির আধুনিক সিগন্যাল বাতি স্থাপন করা হবে। এজন্য জরিপ করে কোন মোড়ে কী পরিমাণ যানবাহন চলাচল করছে সেটি বের করতে হবে। সে অনুযায়ী নতুনভাবে ডিজাইন করা হবে। এটি আরও সময় লাগবে।”
তিনি আরও বলেন, “সাত থেকে আট বছর ধরে নগরের ট্রাফিক সিস্টেম হাতের ইশারা ও বাঁশির মাধ্যমে পরিচালনা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বড় বড় মোড়গুলোতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।”
ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শহরের সিগন্যাল বাতির মোড় রয়েছে প্রায় ৪০টি। ৯০ দশকে এসব বাতি সচল ছিলো। কিন্তু ধীরে ধীরে এসব বাতি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এসব বাতি রক্ষণাবেক্ষণ করে।
এবারও নতুনভাবে বাতিগুলো স্থাপন করছে চসিক। ইতোমধ্যে নগরের বারিক বিল্ডিং থেকে ষোলশহর দুই নম্বর গেট পর্যন্ত বাতি স্থাপন কাজ শেষ হয়েছে। ওই অংশে ছয়টি মোড় রয়েছে। প্রতি মোড়ে ১২টি করে মোট ৭২টি বাতি স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “প্রথম দফায় সিমেন্ট ক্রসিং থেকে ষোলশহর দুই নম্বর গেট পর্যন্ত মোড়গুলোর সিগন্যাল বাতি লাগানো হবে। ইতোমধ্যে বারিক বিল্ডিং, বাদামতলী, চৌমুহনী, টাইগারপাস, ওয়াসা ও দুই নম্বর গেট মোড়ের কাজ শেষ হয়েছে।”