সিনহা হত্যা মামলা: শেষ হলো পঞ্চম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা
কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে গতবছর সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পঞ্চম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হয়েছে।
গত রোববার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিনদিনে ১৪ সাক্ষী জবানবন্দি দেন। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, আগামী ২৫-২৭ অক্টোবর তিন দিনের জন্য ষষ্ঠ দফায় সাক্ষ্যের দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
তিনি বলেন, "চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুত সম্পন্ন করতে আমাদের প্রচেষ্টা থাকলেও আসামিপক্ষ সবসময় তাতে ব্যাঘাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন। মামলার দ্বিতীয় আসামি পুলিশের বরখাস্ত ওসি প্রদীপের আইনজীবী মামলার দ্বিতীয় সাক্ষীকে রি-কলের আবেদন করেছেন ১২ অক্টোবর। এটি মামলার গতিশীল কার্যক্রমকে স্থবির করার পায়তারা।"
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার এম. নুরুল কবির জানান, প্রতিদিন ১০ জন সাক্ষী উপস্থিত থাকার জন্য সমন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরমধ্যে ৯ জন করে আদালতে হাজির হন।
এপিপি ও কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ বলেন, সাক্ষীরা যথারীতি আদালতে উপস্থিত থাকলেও আসামীদের পক্ষে জেরা দীর্ঘ করার কারণে সমন পাওয়া সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য নির্ধারিত দিনে গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না।
সাক্ষ্যগ্রহণকালে মামলার ১৫ আসামীকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। আসামিরা হলেন, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
গত ২৩ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করেন। ৫ আগস্ট নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য র্যাব-১৫কে দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে মামলার এজাহারে থাকা ৯ আসামীর সাথে আরো ছয়জনকে সন্ধিগ্ধ আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।