সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে পুলিশের ‘আলোর ইস্কুল’
দরিদ্র, ঝরে পড়া এবং পথশিশুদের পড়াশোনার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা গড়ে তুলেছেন ‘আলোর ইস্কুল’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বুড়িগঙ্গা নদীর পাশে মনোরম পরিবেশে আলোর ইস্কুলের যাত্রা শুরু হয় এ বছরের জানুয়ারি মাসে। পোস্তগোলার পুলিশ ফাঁড়ির একটি পরিত্যক্ত কক্ষ সংস্কার করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সেখানে অল্প কিছু শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু হয়। বতর্মানে আলোর ইস্কুল চার কক্ষের একটি টিনশেড ভবন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধশত। স্কুলটিতে শিশুশ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন ডিএমপি’র শ্যামপুর জোনের সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. মফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, “ঢাকায় ৪০ লাখ মানুষ বস্তিবাসী। এদের মধ্যে অনেকেই নানা রকম সামাজিক অপরাধে লিপ্ত। বস্তি ঘরে বিক্রি হয় গাঁজা, ইয়াবার মতো মাদক। এছাড়াও এই সমাজের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকেই বস্তি থেকেই তৈরি হয়েছে। তাই এই বস্তিতে জন্ম নেয়া শিশুদের যদি আমরা শিক্ষার আলোয় আনতে পারি তবে ভবিষ্যতে অপরাধ অনেকটাই কমে যাবে। এই ধারণা থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আমি এই স্কুলটি পরিচালনা করছি।”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আলোর স্কুল পরিচালনার জন্য একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ঢাকার ওয়ারী বিভাগের শ্যামপুর জোনের এসি পদাধিকার বলে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও কদমতলী থানার ওসি সহ-সভাপতি, শ্যামপুর মডেল থানার ওসি সাধারণ সম্পাদক এবং আরো দুই পুলিশ কর্মকর্তা স্কুলটির পরিচালনার জন্য রয়েছেন। এছাড়াও পুলিশের বাইরের কয়েকজন দাতা সদস্য রয়েছেন, যারা সকলে মিলে আর্থিক সহায়তা দিয়ে স্কুলটি পরিচালনা করছেন।
বতর্মানে আলোর স্কুলে চারজন্য শিক্ষক রয়েছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. মনিনুল ইসলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা এই শিক্ষক বলেন, “ছাত্র জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন অসহায় পথশিশু, প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য কাজ করেছি। এরই ধারাবাহিকায় আলোর ইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে রয়েছি।”