সেন্টমার্টিনের পথে মৌসুমের প্রথম পর্যটকবাহী জাহাজ
আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজারের অন্যতম পর্যটন স্পট সেন্টমার্টিনে এ মৌসুমের পর্যটক যাতায়াত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মৌসুমের প্রথম জাহাজ 'কেয়ারি ক্রুজ এন্ড ডাইন' ৩১০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনের পথে রয়েছে। দুপুরের মধ্যে জাহাজটি দ্বীপে পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্যুরস অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের সাবেক সভাপতি ও 'পদক্ষেপ বাংলাদেশ' কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি তোফায়েল আহমেদ।
কেয়ারি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কক্সবাজার অফিসের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, "জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র পেয়ে পূর্ব প্রস্তুতি মতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় সেন্টমার্টিনের পথে যাত্রা করে আমাদের প্রথম জাহাজ। প্রথমদিন ৩১০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন গেছেন। কেউ কেউ ওখানে রাত্রি যাপনে থেকে যাবেন আর অনেকে ফিরে আসবেন। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ফিরে আসতে পারলে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে অন্য জাহাজ চলাচলও শুরু হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। আরো অনেক আগেই বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ-পরিবহন দপ্তরের ছাড়পত্র পায় কয়েকটি জাহাজ। রবিবার থেকেই দ্বীপে ভ্রমণকারীদের টিকেট বিক্রি শুরু হয়, বুকিংও ভালো হয়েছে।"
সেন্টমার্টিন ডাকবাংলো এলাকার সী আইল্যান্ড রিসোর্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) মো. দিদারুল আলম বলেন, দ্বীপের আবাসিক হোটেল ও কটেজগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পর্যটন সেবায় আমরা সবাই প্রস্তুত।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, "জাহাজ চলাচলের খবরে দ্বীপের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। কিন্তু পর্যটন মৌসুমের অনেক সময় চলে যাওয়ায় হতাশাও বিরাজ করছে।"
সূত্র জানায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র জেটিটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠায় মৌসুম শুরুর দেড় মাস হয়ে গেলেও সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু করা যায়নি। এতে চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে সেন্টমার্টিনে বিনিয়োগ করা কোটি কোটি টাকা। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের তদবিরে প্রশাসনের তদারকিতে ভঙ্গুর জেটিটি সংস্কার করা হচ্ছিল পক্ষকাল ধরে। এটি মোটামুটি চলাচল উপযোগী করতে পারায় মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) হতে পরীক্ষামূলকভাবে এ মৌসুমের প্রথম জাহাজ যাত্রা শুরু হয়েছে। এদিন পর্যটকরা নিরাপদে যাতায়াত করতে সক্ষম হলে বাকি জাহাজগুলোও পর্যটক সেবায় চলাচল করবে।
জেলা প্রশাসন সূত্র মতে, এ বছর সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচলের অনুমতির জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে আবেদন করেছে পারিজাত, ফারহান, রাজহংস, সুকান্ত বাবু, কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রুজ এন্ড ডাইন নামে ৬টি জাহাজ। যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সমস্ত ডকুমেন্টস জেলা প্রশাসনে আবেদনের সাথে জমা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রথম জাহাজ ভালোমতো ফেরত আসলে বাকিরা চলাচলের অনুমতি পাবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন, "দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে নতুন জেটি নির্মাণে বেগ পাওয়ায় আগের জেটিটি প্রাথমিকভাবে মেরামত করা হয়েছে। এখন ব্যবহারোপযোগী হওয়ায় জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।"
পর্যটনের দায়িত্বপ্রাপ্ত (এডিএম) অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, "মঙ্গলবার সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি ক্রুজ এন্ড ডাইনের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে। অবস্থা বুঝে আবেদনকৃত জাহাজগুলোকে পর্যায়ক্রমে অনুমতি দেওয়া হবে।"