নাফ নদীতে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যেতে পারবে পর্যটকবাহী জাহাজ
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথসহ এবার নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে সকল নৌযান চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন।
তবে নাফ নদীতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিন যেতে পারবে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, "মিয়ানমারের উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশি জেলেসহ সব ধরনের নৌযান চলাচলকারীদের পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নাফ নদীতে নৌযান নিয়ে না নামতে সীমান্ত এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।"
"গত প্রায় এক বছর ধরে টেকনাফ সীমান্তে পূর্ব পাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছিল। নাফ নদী সীমান্ত এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এ নদীতে এখন কোনো নৌকা বা ট্রলার না নামার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধ ও যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় নাফ নদীর জলপথ ও সীমান্তে বিজিবি এবং কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে," যোগ করেন তিনি।
তবে কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা কেবল নাফ নদীতে নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আরাকান আর্মি নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে নৌ চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয়।
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ জানান, বুধবার সকালে ইউএনও কার্যালয় থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর আগে, মঙ্গলবার রাতে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়েছে। একইসাথে, বুধবার সকাল থেকে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ থেকে কোনো ট্রলার ছাড়া যাবে না বলে জানানো হয়। এ নৌপথে ২৭টি সার্ভিস ট্রলার ও ৪৭টি স্পিডবোট রয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, "মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।"
এদিকে, গত শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত পাঁচদিন ধরে মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী কোনো কার্গো ট্রলার ও জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি এবং মালামাল খালাস করা কার্গো ট্রলার ও জাহাজ মিয়ানমারে ফেরত যেতে পারছে না বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থল বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, "গত শুক্রবার মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে মাছ ভর্তি একটি কার্গো ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করেছেন। গত শনিবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচদিন আর কোনো ধরনের ট্রলার বা জাহাজ আসেনি। বর্তমানে মালামাল নিয়ে আসার চারটি কার্গো ট্রলার স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করে এছে। এরমধ্যে দুটি কার্গো ট্রলার থেকে মালামাল খালাস করা হলেও সেগুলো মিয়ানমারের ফেরত যেতে পারছে না।"