হাসপাতাল ছাড়লেন ঢাবির নির্যাতিত ছাত্রী
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওএসসিসি) চারদিন চিকিৎসা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদকর্মীদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নিপীড়নের শিকার শিক্ষার্থীকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। তিনি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ।
এক সপ্তাহ পর ওই শিক্ষার্থীকে ফলোআপের জন্য হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছে বলেও জানান নাসির উদ্দিন।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার মজনুকে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি, উত্তর) উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মজনুর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এর আগে বুধবার সকালে রাজধানীর ঢাকায় শেওড়া রেলক্রসিং এলাকা থেকে অভিযুক্ত মজনুকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
র্যাবের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার সাংবাদিকদের জানান, মজনু স্বীকার করেছে যে, সে একজন সিরিয়াল রেপিস্ট ও মাদকাসক্ত। নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে ঢাকায় আসা ওই যুবক শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুকদের প্রায়ই ধর্ষণ করতো। সে চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত।
র্যাব জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত রোববার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় হঠাৎ তাকে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পাশের ঝোপে নিয়ে যায় অভিযুক্ত মজনু। সেখানে মেয়েটিকে সে মারধর করে ও ধর্ষণের পর হত্যার হুমকি দেয়।
ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় তীব্র আন্দোলন হয়। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান ঢাবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
যেভাবে মজনুকে গ্রেপ্তার করা হয়?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার জানান, অভিযুক্ত মজনু বিভিন্ন এলাকায় হকার হিসেবে কাজ করত। এছাড়া চুরি-ছিনতাইও করত। তার কাছ থেকে ভুক্তভোগী মেয়েটির মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
মজনু ঢাবি ছাত্রীর মোবাইলটি ছিনতাই করে অরুণা নামের তার পূর্ব পরিচিত এক নারীর কাছে বিক্রি করে। পরে অরুণা আবার খাইরুল নামের এক ব্যক্তির কাছে মোবাইলটি বিক্রি করে দেয়।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগী মোবাইল ফোনটিকে ট্র্যাক করি এবং শেওড়া এলাকা থেকে প্রথমে খাইরুলকে ও পরে অরুণাকে আটক করি। পরে অরুণার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শেওড়া এলাকা থেকে মজনুকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’
এর আগে গত সোমবার ভুক্তভোগী পুলিশকে জানিয়েছিল যে ধর্ষক একা ছিল এবং তার মুখের সামনের পাটিতে দাঁত নেই। এই তথ্য অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
গ্রেপ্তারের পর মজনুকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।