হেফাজত তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশের যত ক্ষতি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের চালানো তাণ্ডবে জেলা পুলিশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি তাণ্ডবের ঘটনায় শতাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৬ মার্চের তাণ্ডবে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ৪৩টি জানালার গ্লাস, নিয়ন্ত্রণকক্ষের সিসি ক্যামেরার মনিটর, কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন, জেনারেটর, ট্রাফিক পুলিশের ভাস্কর্য, রিকুইজিশন করা দুটি মাইক্রোবাস, একটি পাজেরো জিপ ও ১৩টি মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ওইদিন সদর মডেল থানার ২নং ফাঁড়ির ৫২টি জানালার গ্লাস, চারটি সিসি ক্যামেরা, দুটি সিলিং ফ্যান, ছয়টি মোটরসাইকেল ও চারটি দরজার থাই গ্লাসসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২৮ মার্চ পুলিশের রিজার্ভ অফিসের দরজা-জানালা, ১নং গেইটের সেন্ট্রি পোস্টের দরজা-জানালা, পুলিশ লাইন্স গেইট ও সীমানা প্রচীরের লাইট, মসজিদের জানালা, পুলিশ লাইন্স স্কুলের জানালা, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পজ মেশিন, স্প্রিড গান, এলকোহল ডিটেক্টর, আরএফআই গান, ক্যামেরা, ওয়ারলেস সেট, কম্পিউটারসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া একই দিনে আশুগঞ্জ টোল প্লাজার পুলিশ ফাঁড়ির ৯২টি জানালা, দুইটি হেলমেট, ছয় জোড়া ল্যাগগার্ড, দুটি ওয়াকিটকি চার্জার, চায়না রাইফেলের ২০টি গুলি, একটি ল্যাপটপ, একটি ভিডিও ক্যামেরাসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করে হরতালকারীরা।
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ মার্চ দুপুরের পর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মাদরাসা ছাত্র ও হেফাজত নেতাকর্মীরা ওইদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে আগুন দেয়।
এরপর ২৮ মার্চ হরতালের দিন জেলা পরিষদ ভবন, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা গণগ্রন্থাগার, পৌরসভা কার্যালয় ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হেফাজতকর্মীরা। এছাড়া ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত মোদিবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নিহত হন।