৭২ শতাংশ যুবসমাজ ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও কর্মমুখী শিক্ষার খোঁজ রাখেন মাত্র ২৮ শতাংশ
বাংলাদেশের যুবসমাজের মধ্যে ৮৬ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। এর মধ্যে সামগ্রিকভাবে ৭২ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও তাদের মধ্যে মাত্র ২৮.৩ শতাংশ ইন্টারনেটের মাধ্যমে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) সম্পর্কিত উপকরণ অনুসন্ধান করেছেন।
ব্র্যাকের উদ্যোগে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং পরবর্তীকালে কর্মসংস্থানের ব্যাপারে যুবাদের ধারণা সংক্রান্ত একটি বেজলাইন জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী যুবাদের অধিকাংশ (৬৫ শতাংশ) ফেসবুককে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে কার্যকর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার 'বাংলাদেশের কর্মমুখী শিক্ষায় যুব সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন' শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ের মতবিনিময় সভায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কর্মমূখী শিক্ষাব্যবস্থা সম্প্রসারণ হলে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। দেশের বেকারত্ব সমস্যা দূর হবে। তাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে হবে।
'চেঞ্জিং দ্য পারসেপশন অব ইউথ ইন বাংলাদেশ অ্যাবাউট স্কিলস ডেভলপমেন্ট' বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
ব্র্যাক স্কিলস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের বর্তমান ইনচার্জ তাসমিয়া তাবাসসুম রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, "বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার চাকরিগুলিকে এখনও কায়িক শ্রমের চাকরি হিসেবে অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়। এই ভুল ভাঙাতে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।"
মূল প্রবন্ধে উঠে আসে যে, এখনও কারিগরিক শিক্ষার বিষয়ে অনেক যুবক আগ্রহী নয়। এছাড়া,কারিগরি শিক্ষায় এখন মাত্র ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী মেয়ে।
জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, আমাদের কর্মীদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। ডিজিটাল বিপ্লব বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে আমাদের টিকে থাকতে হলে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম তরিকুল ইসলাম বলেন, "দেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালের সুবিধা ভোগ করছে। আমাদের একে কাজে লাগাতে হবে।"
তিনি বলেন, "সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে। সেখানে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। আমাদের অভিভাবকদের বোঝাতে হবে তারা যেন তাদের সন্তানকে কর্মমুখী শিক্ষা নিতে উৎসাহিত করেন।"
বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ই পিটারসেন বলেন, "করোনার এই সময়ে অনলাইন শিক্ষা খুবই গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক শিক্ষার্থীর ডিভাইস না থাকার কারণে অনলাইনে শিক্ষা নিতে পারছে না। তাদের ডিভাইস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।"
অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। তিনি বলেন, "ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে শুধু দালান তৈরি করলেই চলবে না, বরং তারা যাতে সেই দক্ষতা প্রশিক্ষণকে কাজে লাগিয়ে চাকরি পায় অথবা, উদ্যোক্তা হতে পারে বা, আয় বর্ধককাজে আত্মনিয়োগ করে জীবনমান উন্নত করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।"