‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ সম্মাননায় ভূষিত প্রধানমন্ত্রী
তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা রাখায় ইউনিসেফের মর্যাদাপূর্ণ ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কে ইউনিসেফ হাউজে ‘অ্যান ইভনিং উইথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল- ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর।
সম্মাননা পাওয়ার পর ইউনিসেফের দেওয়া এই পুরস্কার দেশবাসী এবং বাংলাদেশ ও সারাবিশ্বের শিশুদের জন্য উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ছাড়া কোনও জাতি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। তাই তরুণদের উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানে উপযোগী করে গড়ে তুলতে দেশব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ইউনিসেফকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, “লক্ষ লক্ষ তরুণ তাদের দক্ষতা নিয়ে আমাদের জীবন ও জীবিকা নির্বিঘ্ন করে চলেছে। একটি দায়িত্বশীল ও জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজ গঠন করতে আমাদের অবিচল পদক্ষেপেরও প্রকাশ করে এই স্বীকৃতি।”
শেখ হাসিনা বলেন, "এই সম্মান আমার একার নয়, এটি বাংলাদেশের। কারণ বাংলাদেশের জনগণ আমাকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করেছেন। এ কারণেই আমি তাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।”
কেউ যেন পেছনে পড়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্য ধরে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজানোর কথা শেখ হাসিনা বলেন।
জাতি গঠনে বাংলাদেশের তরুণদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের যুবসমাজ জাতির সমস্ত সঙ্কটময় স্থানে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে।
“বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন যে যুবকদের সম্ভাবনা পূরণ না করে অগ্রগতি সম্ভব নয়।
“আমরা জ্ঞানসম্পন্ন একটি তরুণ প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সহায়তা করতে পারবে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রতি পাঁচজনের একজনের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে এবং এক চতুর্থাংশের বয়স ১৪ বছরের নিচে। এই তরুণরা ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হচ্ছে, যাতে পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু করতে পারে। তাদের জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান প্রয়োজন।
প্রতি বছর ২০ লাখ যুবক বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা দক্ষতা বিকাশের দিকে গুরুত্বের সঙ্গে মনোনিবেশ করেছি এবং যুবকদের যথাযথ জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”
স্থানীয় ও বিশ্ব বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার নির্বাচিত ১০০ টি উপজেলায় ১০০ টি কারিগরি স্কুল ও কলেজ স্থাপন করছে। ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য উপজেলাতেও এ জাতীয় স্কুল ও কলেজ হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বেকার ও অপ্রশিক্ষিত যুবকদের মানবসম্পদে রূপান্তর করার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে, বিশেষ করে শিক্ষার পাশাপাশি শিশু ও নারীদের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ইউনিসেফকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তরুণদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে ‘ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট পলিসি’ বাস্তবায়ন, শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ভূমিকার জন্য শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক।
ইউনিসেফের গুডউইল অ্যাম্বাস্যাডর ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক আবদুল মোমেনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান বলেন, শিশু মৃত্যুর হার কমাতে, শিক্ষার হার বাড়াতে এবং লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ‘দুর্দান্ত অগ্রগতি’ অর্জন করেছে।
“আর এই প্রচেষ্টায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”