চবি ছাত্রলীগ: তিন বছর পর ৩৭৬ জনের কমিটি, তবু পদবঞ্চিতদের অবরোধে অচল ক্যাম্পাস
তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। রাতে কমিটি ঘোষণা হলেও ভোর হতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পদবঞ্চিতরা। কমিটি পুনর্বিন্যাসের দাবিতে অবরোধের ডাক দিয়েছে তারা। ফলে অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
রোববার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষর করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৬৯ জন সহসভাপতি, ১২ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক রাখা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে সভাপতি করা হয় রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় ইকবাল হোসেন টিপুকে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে আজ ভোরে অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ সময় ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে বিক্ষোভ শুরু করে শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ বিজয়ের পদবঞ্চিত নেতা কর্মীরা। এরপর রাত দেড়টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা দেন বিজয় গ্রুপের নেতা কর্মীরা। এদিকে অবরোধের কারণে ক্যাম্পাস থেকে নগরীর উদ্দেশে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কোন বাস ছেড়ে যায়নি। সকালে সাড়ে সাতটার বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করে অবরোধকারীরা। ফলে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এর আগে কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর রাত একটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হল, শাহ আমানত হল ও এ এফ রহমান হলে বেশ কয়েকটি ভাঙচুর করেন পদবঞ্চিতরা। এ সময় কমিটিতে ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদকের পদপ্রাপ্ত সিরাজুল কবির সাহিলকে মারধর করেন তারা। এরপরেই আলাওল হল, এ এফ রহমান হল ও সোহরাওয়ার্দী হল থেকে শতাধিক নেতাকর্মী জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদ পাওয়া বিজয় গ্রুপের নেতা নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, 'এখানে অসংখ্য ত্যাগী, পরিশ্রমী যোগ্য ছেলেরা কমিটিতে বাদ পড়ছে। ওরা ওদের মূল্যায়নের দাবিতে অবরোধের ডাক দিয়েছে।'
আন্দোলনরত নেতা কর্মীদের দাবি, বিজয় গ্রুপের আরেক নেতা ও কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া মো. ইলিয়াসকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে।
এদিকে ছাত্রলীগের অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমির মোহাম্মদ টিবিএসকে বলেন, 'শাটল ট্রেন না চললে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না। আমি বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানদেরকে সকল পরীক্ষার্থীর উপস্থিতি ও ক্যাম্পাস শান্ত রাখা সাপেক্ষে পরীক্ষা নিতে বলেছি।'