রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অগ্রগতি ৮০%, উৎপাদন শুরু অক্টোবরে
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
এ কোম্পানির প্রথম ইউনিট থেকে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে জাতীয় গ্রিডে বিদুৎ সরবরাহ করা হবে। এছাড়া ২য় ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদুৎ সরবরাহ শুরু হবে।
প্রথম ইউনিট চালু করার জন্য ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আনাও হয়েছে।
বিআইএফপিসিএল'র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আনোয়ারুল আজীম বলেন, 'বাংলাদেশের পতাকাবাহী এম ভি আকিজ হেরিটেজ জাহাজে করে ইন্দোনেশিয়া থেকে এই কয়লা এসেছে। সেখান থেকে পাওয়ার প্লান্টের নিজস্ব জেটিতে কয়লা খালাসের কাজ শুরু হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'প্রথমে ৩ লাখ মেট্রিক টনে কয়লা আমদানির চুক্তি করা হয়েছিল। এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সেই কয়লা আসবে।'
বৃহস্পতিবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজ থেকে কয়লা নামানো শুরু হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, 'বিশ্ব অর্থনৈকিত টালমাটাল পরিস্থিতিতে মোংলা বন্দরে জাহাজের আগমন স্বাভাবিক রয়েছে। নতুন নতুন পণ্যের জাহাজ ভিড়ছে মোংলা বন্দরে।
তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার মোংলা বন্দরে এসেছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের টন কয়লা এমভি আকিজ হেরিটেজ নামক একটি জাহাজ। ধারাবাহিক ভাবে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা খালাসের জন্য মোংলা বন্দর ব্যবহার করার ফলে এই বন্দরের আয় অনেক গুণ বেড়ে যাবে।'
প্রকল্প কর্মকর্তারা আশা করছেন কয়েকদিনের মধ্যেই পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে এ জন্য প্রয়োজন শাটডাউন অনুমোদনের।
আনোয়ারুল আজীম বলেন, 'সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো আমরা আগামী অক্টোবরে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবো। সে লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে।'
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে রামপাল উপজেলার সাপমারী-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির উপর কয়লা ভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে লক্ষ্যে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এরপর ২০১২ সালে ২৯ জানুয়ারি দুই দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব কোম্পানি বিপিডিবি ও এনপিপিসি যৌথ কোম্পানি গঠন করে। ২০১৩ সালে ১ আগস্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়।
২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দরপত্র আহবান করা হয়। ২০১৬ সালের ১২ জুলাই ভারত হেভি ইলেট্রিক্যালস লিমিটেডের (বিএইচইএল) সাথে চুক্তি সাক্ষর হয়।
ইকুইটি বিনিয়োগ সমানভাগে ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গঠন করা হয় বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড নামে।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পর্ণ দুটি ইউনিট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল।