মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চট্টগ্রামে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি
চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে চট্টগ্রামের চা শ্রমিকরা।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে চট্টগ্রামের ২১ টি চা বাগানের প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক এই কর্মসূচি পালন করছে। চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের সবকটি চা বাগানেও এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদেলা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি আশু দাশ টিবিএসকে বলেন, এই চা বাগানে স্থায়ী এবং অস্থায়ী প্রায় ১ হাজার শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করছি। মজুরি ৩০০ টাকা নির্ধারণ না করলে শ্রমিকরা কজে ফিরে যাবে না।
মজুরি বৃদ্ধির দাবীতে এর আগে গত ১ সপ্তাহ ধরে দুই ঘণ্টা ধরে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছিল চা শ্রমিকরা। চা বাগান মালিকরা দাবী মেনে না নেওয়ায় শনিবার থেকে সারাদেশের সবকটি চা বাগানের শ্রমিকরা একযোগে কর্মবিরতির কর্মসূচি দেয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা তপন দত্ত টিবিএসকে বলেন, প্রতি দুইবছর পর চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারিত হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২০ টাকা মজুরী নির্ধারিত হয়েছিলো। পরবর্তী দুই বছরের জন্য চা শ্রমিকদের দাবী ছিলো দৈনিক ৩ শ টাকা মজুরী নির্ধারণ করা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা নির্ধারণ করবে বলে জানায়। ফলে গত দেড় বছরে আর বাড়েনি চা শ্রমিকদের মজুরি। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাস্তবতায় ১৩৪ টাকা মজুরি নির্ধারণ করতে চাওয়া অযৌক্তিক।
তিনি আরো বলেন, ২০২১ সাল থেকে চা বাগান মালিকদের সাথে চা শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির আলোচনা চললেও দেড় বছরেও নতুন মজুরি নির্ধারণ হয়নি। ফলে আগের ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছে চা শ্রমিকরা। এর মধ্যে কয়েক দফা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও শ্রমিকদের মজুরি ১ টাকাও বাড়েনি। এই অবস্থায় চা শ্রমিকরা চরম দুর্বিষহ জীবন পার করছে।
ফটিকছড়ি উপজেলার চা শ্রমিক লিপি কর্মকার বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমি চা বাগানে কাজ করছি। স্বামী স্ত্রী দুজনে কাজ করে দৈনিক বেতন পাই ২৪০ টাকা। এক ছেলে ১ মেয়ে সহ ৪ জনের সংসার এই টাকায় চলেনা। দ্রব্যমুলে্যর দাম যেভাবে বেড়েছে উপোস থাকা ছাড়া কোন উপায় দেখছিনা।
চা শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতির বিষয়ে কথা বলতে চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এর চেয়ারম্যান শাহ আলমের সাথে টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
বিটিএ এর লেবার হেলথ এবং ওয়েলফেয়ার কমিটির আহ্বায়ক তাহসিন আহমেদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটি মিটিং এ আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।