প্রতি কিলোমিটারে বাস ভাড়া কমলো ৫ পয়সা, সুবিধা পাবেন না স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা
জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর পর তার বাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
যাত্রীরা অবশ্য বলছেন, এই স্বল্প পরিমাণে ভাড়া কমানোতে তাদের কোনো লাভ হবে না। বিশেষ করে কম দূরত্বের যাত্রীদের এক্ষেত্রে কোনো লাভ হবেনা বলে জানান তারা। মোট ভাড়া থেকে ১ টাকা কম দেওয়ার জন্য তাদের অন্তত ২০ কিলোমিটার ভ্রমণ করতে হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী জানিয়েছেন, সংশোধনীর পর ঢাকায় এখন থেকে প্রতি কিলোমিটারে বাস ভাড়া হবে ২ দশমিক ৪৫ টাকা। দূরপাল্লার রুটের বাস ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কিলোমিটারে ২.১৫ টাকা।
বুধবার বিকেলে বনানীর বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে বৈঠক করে পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বৈঠকে বাস ভাড়া কমানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
সোমবার (২৯ আগস্ট) ডিজেলের কর ১০ শতাংশ কমানো হয়, যার ফলে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারে ৫ টাকা কমেছে। যদিও ভোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন জ্বালানি তেলের দাম এর চেয়ে কমা উচিত ছিল।
গত ৫ আগস্ট জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ১১৪ টাকা নির্ধারণ করে এবং অকটেন ও পেট্রোলের দাম লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে যথাক্রমে ১৩৫ ও ১৩০ টাকা নির্ধারণ করে।
ওই সময় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর ৬ আগস্ট সর্বশেষ বাস ভাড়া বাড়ানো হয়। তখন দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটারে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ভাড়া ২ টাকা ২০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকা-চট্টগ্রামসহ মহানগরীতে কিলোমিটারপ্রতি ৩৫ পয়সা বাড়িয়ে ভাড়া ২ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়।
'৫ পয়সা কমানো আমার কোনো কাজে আসবে না'
ঢাকার যাত্রীরা বলছেন, নতুন করে বাস ভাড়া কমানো তাদের জন্য কোনো সুখবর বয়ে আনবে না।
রাজধানীর আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজারের নিয়মিত যাত্রী শেখ সাইফ বলেন, "এই ৫ পয়সা কমানো আমার কোনো কাজে আসবে না।"
"কিলোমিটারের হিসাবে আমি যে দূরত্ব ভ্রমণ করি তার জন্য আমার ভাড়া আসে ১২ টাকা। কিন্তু আমাকে ১৫ টাকা ভাড়া দিয়ে চলতে হচ্ছে।"
যাত্রীরা শঙ্কার আরেকটি কারণ ওয়েবিল সিস্টেম। পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত চার্জ নেওয়ার জন্য ওয়েবিল চেক সিস্টেম ব্যবহারসহ গোপন কৌশল ব্যবহার করবে বলে উল্লেখ করে তারা।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুরী বলেন, নতুন ভাড়া সঠিকভাবে বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পরিবহন মালিকদের প্রতিনিধিদের মনিটরিংসহ ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরও বলেন, ওয়েবিল চেক সিস্টেম বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, "একটি বাসে কতজন যাত্রী উঠছে তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য পরিবহন মালিকদের একটি ব্যবস্থা রয়েছে তবে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার জন্য এটি ব্যবহার করা হচ্ছে না," তিনি বলেন।
পরিকল্পনায় ডিজিটাল টিকিট ব্যবস্থা
যাত্রীদের উন্নত সুযোগ-সুবিধা দিতে ডিজিটাল টিকিট ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করছেন পরিবহন মালিকরা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, কিছু বাসে ১০ দিনের মধ্যে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করা হবে।
ভবিষ্যতে সব বাসে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানান তিনি।