মৃত্যুর ২৮ বছর পর বিনিয়োগের লভ্যাংশ পাচ্ছেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম
মারা যাওয়ার ২৮ বছর পর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের লভ্যাংশ পাচ্ছেন শহীদ জননী জাহানার ইমাম।
জাহানারা ইমাম ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তালিকাভুক্ত কোম্পানি দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড- এর শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন।
বর্তমানে কোম্পানিটি ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) রয়েছে।
জাহানারা ইমামের শেয়ারের বিনিয়োগের বিপরীতে তিনি প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার টাকা লভ্যাংশ পাবেন যা উত্তারাধিকার হিসাবে তার ছেলে সাইফ ইমাম জামীর ব্যাংক হিসাবে জমা হবে।
তিনি মারা যাওয়ার পর এই লভ্যাংশ কোম্পানি হিসাবেই থেকে যায়।
মঙ্গলবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লভ্যাংশের টাকার চেক তুলে দেবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম ও পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।
সিএমএসএফ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডে জাহানারা ইমামের শেয়ারগুলোর বিপরীতে প্রাপ্ত ডিভিডেন্ড আনক্লেইমড (দাবিহীন) ছিল। সিএমএসএফ গঠন হওয়ার পর নির্ধারিত সময় দিয়ে কোম্পানিটিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিনিয়োগকারীদের অর্থ জমা দেওয়ার জন্য। কোম্পানিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ টাকা ফান্ডে জমা দিয়েছে।
সিএমএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনোয়ার হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "মঙ্গলবার সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি ফান্ড ও ইনভেস্টর ক্লেইম সেটেলমেন্ট প্রোগাম অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাহানারা ইমামের এক লাখ ৪২ হাজার টাকাসহ মোট ৪২ বিনিয়োগকারীকে ৭০ লাখ টাকার ডেমু চেক দেওয়া হবে। পরে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।"
তিনি আরো বলেন, "দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ২০০৯ সালে ওটিসি বাজারে স্থানান্তরিত হয়। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের দাবি না করা লভ্যাংশ তার নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রেখেছিল। গত বছর ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ড গঠনের পর কোম্পানিটিকে দাবি না করা লভ্যাংশ জমা দিতে বলা হয়। আমরা তখন জানতে পারি যে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নামেও কিছু লভ্যাংশ রয়েছে।"
১৯২৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণকারী জাহানারা ইমাম তার বিখ্যাত বই একাত্তরের দিনগুলি'র জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। একইসাথে তিনি ছিলেন একজন কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়কারী।
১৯৭১ সালে তার বড় ছেলে শফি ইমাম রুমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বেশ কয়েকটি সফল গেরিলা অপারেশনের পর তাকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আটক করে হত্যা করে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রুমির বন্ধুরা তার মা জাহানারা ইমামকে 'শহীদ জননী' বা সকল মুক্তিযোদ্ধার মা বলে অভিহিত করে।
জাহানারা ইমাম ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন মৃত্যুবরণ করেন।