আগামী মার্চ নাগাদ পিকে হালদারকে ফেরত পেতে পারে বাংলাদেশ
আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে ফেরানো হতে পারে অর্থ পাচারকারী এন আর বি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে।
বৃহস্পতিবার ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) একটি সুত্র গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানায়।
বৃহস্পতিবার নবমবারের মতো কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সিবিআই স্পেশাল কোর্টে অভিযুক্তদের তোলা হয়। পরে পিকে হালদারসহ ছয়জনকে আরও ৫৬ দিন কারাগার রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।
এই সময় প্রয়োজন হলে ইডি তদন্তকারীরা চাইলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন।
স্থানীয় সময় দুপুর ১টা নাগাদ তাদের আদালতে তোলা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সিবিআই স্পেশাল কোর্ট-৪ বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায় ৫৬ দিন পরে আগামী ১৭ নভেম্বর অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।
ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, "অভিযুক্ত প্রত্যেককেই আগামী ১৭ নভেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে এবং ততদিন পর্যন্ত তারা কারাগারেই থাকবেন। প্রয়োজনে ইডির কর্মকর্তারা কারাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন।"
অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, কারাগারে থাকাকালীন অবস্থায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বা নতুন কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হযনি। এই মুহূর্তে অভিযুক্ত পিকে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে।
অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।
এই আইনজীবী জানান, বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় পি কে হালদারকে ফেরত দেওয়া হবে, সেই চেষ্টা চলছে।
এদিকে ইডির একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, চলতি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে পিকে হালদারকে দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা দায়ের হবে না।
চলতি বছরের ১৪ মে কলকাতার বর্ধমান ও অশোকনগরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পি কে হালদার, তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকায় পিকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু
এদিকে, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
প্রথম দিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন। বাদীর জেরার জন্য আগামী ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
পি কে হালদার ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন, পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রীতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অবন্তিকা বড়াল, শঙ্খ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা।
এদের মধ্যে অবন্তিকা, শঙ্খ, সুকুমার ও অনিন্দিতা কারাগারে আছেন।
কেস ডকেট অনুসারে, পিকে হালদার বাংলাদেশে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) থেকে ৩৫০০ কোটি টাকা নিয়েছেন।