ঝড়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ, লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাটে আটকা পড়েছে ৫ শতাধিক যাত্রী
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাট থেকে ভোলাগামী সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে, মজুচৌধুরীর লঞ্চঘাটে প্রায় ৫ শতাধিক ভোলাগামী যাত্রী আটকা পড়েছে। বেশিরভাগ যাত্রী রোববার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে চট্রগ্রাম থেকে বাসযোগে এই ঘাটে আসে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্যোগের মধ্যে দুর্ভোগে পড়ে ঘাটে অবস্থানরত শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ।
ঘাটে নোঙর করা আছে নৌযানগুলো। আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এই ঘাট থেকে ভোলার ইলিশা ঘাটে চলাচলকারী একটি লঞ্চ এর সুপারভাইজার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, 'রবিবার রাত থেকে আমরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন নির্দেশনাই রয়েছে। অনুমতি পেলে আবার নৌযান চলাচল শুরু হবে।'
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে আটকা পড়াদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে চরমনী মোহনের মাতব্বর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়। তবে সোমবার বিকেলেও প্রায় দুই শতাধিক যাত্রীকে ঘাটে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চান না।
মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে আটকা পড়া ভোলার বাসিন্দা রবিউল, হারুনসহ অনেকে বলেন, রোববার রাত ১টার পর থেকে চট্রগ্রাম থেকে ভোলার উদ্দেশ্যে তারা লঞ্চঘাটে আসে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রাত থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। রাতে তারা লঞ্চেই রাত্রিযাপন করেছেন। সকাল থেকে লঞ্চে ছিলেন। প্রশাসনের লোকজন এসে তাদেরকে লঞ্চ থেকে বের করে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলেছে। কেউ কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে গেছে। কেউ ঘাটের দোকানগুলোতে বসে আছে। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তারা।
আটকা পড়াদের কয়েকজন জানান, নৌযান বন্ধ থাকার কথাটি তারা জানতেন না। তাই তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে চট্রগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে এসেছেন বলে জানান।
আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ভোলার বাসিন্দা ইমন বলেন, আমরা চারজন চট্রগ্রাম থেকে ভোলার উদ্দেশ্যে লক্ষ্মীপুরে আসি। রাতে লঞ্চে ছিলাম। আজ দুপুরে প্রশাসন আমাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসে। এখানে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল জানান, গতরাত থেকে প্রায় ৫ শতাধিক ভোলাগামী লঞ্চযাত্রী ঘাটে এসে আটকা পড়েছে। এতে নারী, শিশুসহ সকলে দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। দুপুরে ডিসি, এসপি, ইউএনও এসে আটকা পড়াদের মধ্যে তিন শতাধিক লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তাদের জন্য দুপুরে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। রাতে আমাদের উদ্যোগে খিচুড়ি রান্না হবে। যে কয়দিন লঞ্চ না চলে, আটকা পড়া যাত্রীদের আশ্রয় দেওয়া হবে।