কুমিল্লায় বিএনপির সমাবেশ শুরু
কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে।
সমাবেশ শুরুর সময় বিএনপির দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন এস এম মিজানসহ জাসাস নেতৃবৃন্দ। দলীয় সংগীতের পর বিদ্রোহী কবির কারার ওই লৌহ কপাট গান বাজানো হয়।
এরপরই কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।
দুপুর ২টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমাবেশস্থলে আসার কথা রয়েছে।
মঞ্চে বর্তমানে উপস্থিত আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়াসহ অন্যান্য নেতারা।
এদিকে, মঞ্চে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য প্রতীকী আসন রাখা হয়েছে।
তবে আজকের সমাবেশে খণ্ড খণ্ড মিছিল প্রবেশ করলেও ফেস্টুন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগত সকলের জন্য রাজশাহীর আমেরিকা প্রবাসী এক বিএনপি নেতা পানির ব্যবস্থা করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার বিকেলে জনসমাগম বেড়ে যাওয়ায় মঞ্চ তৈরিতে বেগ পেতে হয় আয়োজকদের। ফলে সন্ধ্যায় কাজ বন্ধ রাখতে হয় তাদেরকে। শেষ রাতে মঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়।
শনিবার সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। ঢোল-তবলার আওয়াজ ও মিছিলে মুখর হয়ে ওঠে টাউন হল প্রাঙ্গণ।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি থেকে আসা ছাত্রদল নেতা আবদুল আজিজ জানান, "গতকাল রাতে কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে এসেছে। রাত কাটিয়েছি এখানেই।"
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের যুবদল নেতা আবুল বাশার জানান, "ধর্মঘটের শঙ্কায় দুইদিন আগে কুমিল্লায় এসে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান নিই। আমাদের উদ্দেশ্য যেকোনো মূল্যে সমাবেশ সফল করা।"
এদিকে, টাউন হলের সমাবেশকে সামনে রেখে পুরো কুমিল্লায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
শনিবার কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর, মডার্ন হাইস্কুল, ধর্মপুর রেলগেট, শাসনগাছা রেলগেট, টমছমব্রিজ, চকবাজারসহ নগরীর সকল প্রবেশদ্বারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নগরীর মোড়ে মোড়ে নেতাকর্মীদের জটলা
সকাল ৯টার পরই পরিপূর্ণ হয়ে যায় কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণ। মিছিলের পর মিছিল আসতে থাকে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশস্থলে। কিছুক্ষণ পর জায়গা না পেয়ে বাইরে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা।
এরপর ছোট ছোট মিছিল শেষে পুরো শহরেই ছড়িয়ে পড়ে তাদের অবস্থান।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর পূবালী চত্বর থেকে রানির বাজার, কান্দিরপাড় থেকে শাসনগাছা, রানির দিঘি, ফৌজদারী মোড়, রাজগঞ্জ, সালাউদ্দিন হোটেল ও আশপাশের এলাকায় মাইকের নিচে জটলা বেঁধে সমাবেশের বক্তব্য শুনছেন কর্মীরা।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজি আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন বলেন, "পুরো কুমিল্লা আজ উৎসবের নগরী। জনতার বিজয় সুনিশ্চিত।"
সমাবেশস্থলের তিন কিলোমিটার জুড়ে বাজছে মাইক
কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশস্থলের তিন কিলোমিটার জুড়ে বাজছে মাইক।
নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা টাউনহল মাঠে জায়গা না পেয়ে বাইরে অবস্থান করছেন তাদের শোনার জন্য এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে এত শব্দ যেন মানুষের ক্ষতি না করে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ভালো ও নিয়মতান্ত্রিক সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারের কথা জানিয়েছে বিএনপি নেতারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সভাস্থল থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ এলাকা, টমছমব্রিজ এলাকা, পুলিশ লাইন, রানির বাজার জিলা স্কুল গেট ও রানির দিঘির পাড় পর্যন্ত সড়কের পাশ ঘেঁষে এসব মাইক লাগানো হয়েছে।
বিএনপি কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, "তিন কিলোমিটার জুড়ে মাইক লাগানো হয়েছে। অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কিছুক্ষণ পরেই মাঠে আসবেন।"
নগরীতে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত
কুমিল্লা নগরীতে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে সংবাদকর্মীরা তাদের কাজ করতে পারছেন না।
একাধিক সংবাদকর্মী বলেন, আগের সমাবেশগুলোতেও মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বিঘ্ন হয়েছে। এবারও একই অবস্থা।
মোবাইল সেবা প্রতিষ্ঠানের দুজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানান, একটি টাওয়ারে সাধারণত যতটুকু ইন্টারনেট কাভার হয় তারচেয়ে বেশি মোবাইল এক্সসেস হচ্ছে। তাই বাফারিং হচ্ছে।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন বলেন, "এটা সরকারের নির্দেশেই হয়েছে। আগের সমাবেশেও এমন হয়েছে। এগুলো করে নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।"