ফারদিনের মৃত্যু: তদন্তের আলামত নিয়ে আলোচনা করতে র্যাব সদর দপ্তরে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলার আলামত নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষার্থী।
সূত্র জানায়, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রায় চার ঘণ্টা ধরে র্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে এবং এ পর্যন্ত র্যাব কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিটি তথ্য নিয়ে আলোচনা করে।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েট শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার তথ্যের বিষয়ে তাদের এখনও কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে, তাই তারা বিস্তারিত আলোচনা করতে র্যাব সদর দপ্তরে গেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত এক র্যাব কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, ফারদিন পোস্তগোলা এলাকার সুলতানা কামাল সেতুতে কেন গেলেন- এমন প্রশ্ন করেন শিক্ষার্থীরা। সিসিটিভি ফুটেজে ফারদিনকে স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা না গেলে র্যাব কীভাবে তাদের সিদ্ধান্তে উপনীত হয় তাও জিজ্ঞাসা করেন তারা।
র্যাবের এই কর্মকর্তা যোগ করেন, "আমরা তাদের প্রতিটি প্রশ্নের বিস্তারিত এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ দিয়েছি। আমরা আশা করছি তারা এখন বুঝতে পারবে।"
র্যাব সদর দপ্তর থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে জানান, শনিবার বুয়েট চত্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করবেন তারা।
তদন্ত শেষে বুধবার র্যাব জানায়, নিখোঁজ হওয়ার রাতে ফারদিন সুলতান কামাল সেতু থেকে পোস্তগোলা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
র্যাবের সদর দপ্তরে যাওয়া শিক্ষার্থীদের এই দলটিই বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) গিয়ে দাবি করে, ফারদিন আত্মহত্যা করেনি।
ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিনও ডিবি ও র্যাবের কথা অস্বীকার করে দাবি করেন, তার ছেলে আত্মহত্যা করেননি।
বুধবার ফারদিন হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, তারা এ মামলায় নিহতের বন্ধু আমাতুল্লাহ বুশরার কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি।
অথচ নভেম্বরে গ্রেপ্তারের পর বুশরার জামিন আবেদনের বিরোধীতা করে তার রিমান্ড চায় তদন্তকারী সংস্থা। তখন থেকেই জেলে আছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী।
বুশরার পরিবারের দাবি, তাকে একটি কাল্পনিক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং তার জীবন এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বুশরার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বিনা কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকে। এটা কি ধরনের পাগলামি? বুশরার মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে।"
নিখোঁজের তিন দিন পর ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে ফারদিনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে তার মৃত্যুর ঘটনায় ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রামপুরা থানায় মামলা করেন।