২৬% মানুষ ভোগা সত্ত্বেও দেশে বাতজ্বরের চিকিৎসা অপ্রতুল
দেশের অন্তত ২৬ শতাংশ মানুষ বাতজ্বরে ভুগছেন। তবে, এ সত্ত্বেও এই রোগের চিকিৎসা দেশে অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কনভেনশন হলে বাত রোগীদের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরেন বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এই রোগের চিকিৎসায় সরকার যা করছে, এর বাইরেও বাত রোগীদের জন্য বেসরকারি উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।
বাতরোগে আক্রান্তদের কষ্টের কথা তুলে ধরে ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বাতজনিত রোগগুলো অনেক মানুষকে কষ্টে রাখে। রোগগুলোর যথার্থ চিকিৎসার অভাবে কর্মক্ষম মানুষ যেমন অক্ষম হন, তেমনি পরিবারগুলোও দরিদ্র হতে থাকে।
"তাই সবার আগে জরুরি যথাসময়ে রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা। তবে বাস্তবতা হলো আমরা নিজেরা সচেতন নই। পাশাপাশি রোগী ও তাদের স্বজনদের চিকিৎসার সামর্থের অভাব রয়েছে," যোগ করেন তিনি।
বাতরোগের সুচিকিৎসার জন্য আরও গোছানো ও অনেকগুলো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং বাতরোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন বলেও মনে করেন এই চিকিৎসক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে দিন দিন চিকিৎসা ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হচ্ছে। অনেক জটিল ও কঠিন রোগের বিশ্বমানের চিকিৎসা দিচ্ছেন আমাদের চিকিৎসকরা। এরপরেও সংকট মোকাবেলায় এখনও অনেক কিছু করা বাকি।
বাতজনিত রোগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরায় ডা. নজরুল ইসলামের প্রশংসা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বর্তমানে প্রায় ৩৫ লাখ নারী-পুরুষ হাঁড়ক্ষয় রোগে; প্রায় ১৭ লাখ মানুষ রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস; প্রায় ৮০ লাখ মানুষ ওয়ে নি বা হাঁটুব্যথা বাতে এবং প্রায় ১৩ লাখ মানুষ কোমরব্যাথা বা স্পনডাইলো আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন।
ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো বাতজনিত রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দিয়ে ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসায় বাতরোগের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ওষুধ ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মাধ্যমে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ চিকিৎসার অভাবে পঙ্গু হয়ে যাওয়া কারোরই কাম্য হতে পারেনা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ডা. লিয়াকত আলী এবং সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন প্রমুখ।