হাকালুকি হাওরে বালিহাঁস দিয়ে পিকনিক, বনবিভাগের মামলা দায়ের
'বালিহাঁস দিয়ে আজকের আয়োজন হাকালুকি হাওরে' এভাবেই বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত পরিযায়ী পাখি খেয়ে বনভোজন করে নিজেদের ফেসবুকওয়ালে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বাইকার কমিউনিটির কয়েকজন যুবক। তাদের পাখি খাওয়ার ফেসবুক পোষ্টটি ভাইরাল হলে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান পরিবেশ কর্মীরা। শান্তির দাবিও জানান তারা। এ ঘটনার দু'দিন পর আজ কুলাউড়া থানায় মামলার অভিযোগ দায়ের করেছে মৌলভীবাজার বনবিভাগ।
অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) হাসান মোহাম্মদ নাসের রিকাবদার । তিনি জানান, 'বনবিভাগ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, এটি এখন মামলা হিসেবে রেকর্ড হবে'।
বনবিভাগের সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার কামারকান্দি গ্রামের আনাফ শাহারিয়ার ও মীরসংকর গ্রামের মাহবুব আহমদ সুমনের নাম উল্লেখ করে আরও ৬-৭ জনকে অজ্ঞাতনামা রেখে এই অভিযোগপত্রটি মামলার জন্য কুলাউড়া থানায় দায়ের করেছেন মৌলভীবাজার সদরের রেঞ্জার গোলাম ছারওয়ার ।
বিভাগীয় বনকর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, ঘটনার দিনেই মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বিষয়টি আমাদের অবগত করেন এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেন।
তিনি বলেন, এসব ঘটনায় আমরা স্বাভাবিকভাবেই মামলা দায়ের করি। মামলার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে- অভিযোগপত্র দাখিল করা, আজ আমরা তা করেছি। সেইসাথে অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তিমূলক ফেসবুক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশটসহ ভিডিও প্রমাণ হিসেবে জমা দিয়েছি। আইনি প্রক্রিয়ায় এটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরের পর নিজের ফেসবুকওয়ালে কুলাউড়া মিলি প্লাজা মনাফ টেলিকমের পরিচালক মাহবুব আহমেদ সুমন ও তার সঙ্গী আনাফ শারিয়ারসহ ৯ জন বন্ধু মিলে হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী পাখি বালিহাঁস খেয়ে পিকনিক করেন। পরে সেই ভোজের ছবি, ভিডিও নিজেদের ফেসবুকওয়ালে শেয়ার করে বালিহাঁস খাওয়ার তথ্যও উল্লেখ করেন অভিযুক্তরা।
পরে এ নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হলে তারা পোস্টটি সম্পাদনা (এডিট) করে 'হাঁস' লিখেন এবং স্থানীয় বাজার থেকে হাঁসের ছবি তুলে দাবি করতে থাকেন যে, তারা আসলে এই হাঁস খেয়েছেন। শুধু তাই নয়, যারা প্রতিবাদ করেছিল তাদেরকেও দলবদ্ধভাবে হুমকি দিতে থাকেন।