একটি দেশ কেন আইএমএফের ঋণ চায়, ব্যাখ্যা দিল চ্যাটজিপিটি
কয়েক সপ্তাহ ধরে সংবাদমাধ্যম ও অনলাইন দুনিয়া সরগরম করে রেখেছে চ্যাটজিপিটি। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিল। এ চ্যাটবটের দেওয়া অধিকাংশ জবাবই প্রায় যথার্থ হয়েছে। চলুন চ্যাটজিপিটিকে করা প্রশ্ন ও এর উত্তরগুলো দেখে নেওয়া যাক।
একটি দেশ কখন আইএমএফের ঋণ চায়?
ব্যালান্স অভ পেমেন্ট সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি অথবা বড় সরকারি ঋণের মতো অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়লে একটি দেশ আইএমএফের ঋণ চায়। আইএমএফ দেশগুলোকে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য ঋণ দেয়। এ ঋণ দেশটিকে আমদানি, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ এবং মুদ্রা সহায়তা দিতে সাহায্য করতে পারে। তবে আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে আইএমএফ ওই দেশকে আর্থিক সমস্যার মূল কারণগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য অর্থনৈতিক নীতি ও সংস্কার বাস্তবায়ন করতে বলে।
একটি দেশের ভাবমূর্তির জন্য আইএমএফের ঋণ ভালো নাকি খারাপ?
আইএমএফের ঋণ চাওয়া একটি দেশের ভাবমূর্তির ওপর মিশ্র প্রভাব ফেলতে পারে। একদিকে, আইএমএফের কাছে ঋণ চাওয়াকে দায়বদ্ধতার লক্ষণ হিসেবে দেখা যেতে পারে এবং অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি হিসাবে দেখা যেতে পারে। অন্যদিকে, আইএমএফের ঋণ চাওয়াকে দুর্বলতার লক্ষণ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব হিসেবেও দেখা যেতে পারে, যা একটি দেশের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়া আইএমএফের বাধ্যতামূলক নীতি ও সংস্কারসমূহের বাস্তবায়ন একটি দেশের ভাবমূর্তির ওপর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুধরনের প্রভাবই ফেলতে পারে। যেমন, দুর্নীতি হ্রাস ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাঠামোগত সংস্কারগুলো একটি দেশের ভাবমূর্তি উন্নত করতে পারে। অন্যদিকে সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি হ্রাস এবং দারিদ্র্যের মাত্রা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নেওয়া কৃচ্ছ্রতা সাধনের পদক্ষেপগুলো একটি দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি করতে পারে।
সর্বোপরি, আইএমএফের ঋণ চাওয়া এবং আইএমএফের বাধ্যতামূলক নীতি ও সংস্কারসমূহ বাস্তবায়ন একটি দেশের ভাবমূর্তির ওপর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের প্রভাবই ফেলতে পারে। এটা নির্ভর করে প্রতিটি কেসের নির্দিষ্ট পরিস্থিতি এবং ঋণ ও সংস্কারগুলোকে জনগণ, সংবাদমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে করে, তার ওপর।
আইএমএফের ঋণ নেওয়ার পর কোনো দেশ কি উল্লেখযোগ্য ফল দেখিয়েছে?
হ্যাঁ, এমন অনেক দেশ আছে যারা আইএমএফের ঋণ নেওয়ার পর উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেখিয়েছে। তবে আইএমএফ ঋণের সাফল্য নির্ভর করে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বাস্তবায়িত নীতি ও সংস্কার এবং এসব নীতি ও সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে ওই দেশের সামর্থ্যসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর।
উদাহরণস্বরূপ, কিছু দেশ, যেমন আয়ারল্যান্ড ও লাটভিয়া, আইএমএফের ঋণ নেওয়ার পর উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেখিয়েছে। আয়ারল্যান্ড সফলভাবে ঋণ সংকট মোকাবিলা এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছিল। লাটভিয়াও তার আর্থিক সংকটের পুনরুদ্ধার ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল।
তবে লক্ষ রালজা গুরুত্বপূর্ণ যে আইএমএফ ঋণের সাফল্য প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিস্থিতির উপরও নির্ভর করে, এবং যেসব আইএমএফের ঋণ নেয় তারা সবাই একই ফলাফল পাবে না। আইএমএফের ঋণ নেওয়া দেশগুলোর ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে—যেমন কৃচ্ছ্রতা সাধনের পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়া—তা বিবেচনায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বোপরি, কিছু দেশ আইএমএমের ঋণ নেওয়ার পর উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেখালেও আইএমএফ ঋণের সাফল্য বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে এবং একেক ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে।