চালু হওয়ার আগেই ২ বছরে ১১২ জাহাজ এসেছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হওয়ার কথা ২০২৬ সালে; কিন্তু এরমধ্যে গত ২ বছরে এ বন্দরে ভিড়েছে ১১২টি পণ্যবাহী জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, এই ১১২ টি জাহাজ থেকে মোট ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক চালু হওয়ার আগেই ১১ টি জাহাজ ভিড়ে রাজস্ব আদায়কে অনন্য রেকর্ড বলে মনে করছে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা।
প্রাথমিকভাবে, এখানে শুধু একটি কয়লা জেটি নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরুর পর এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক বন্দর স্থাপনের সম্ভাবনা দেখে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
২০২০ সালের মার্চে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের অনুমোদন দেয়।
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে।
কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, বর্তমানে গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের জমা দেওয়া দরপত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলছে, দরপত্র পাশের পর কাজ শুরু করা হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত করবে এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ি ইউনিয়ন মূল উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন। এখানেই নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর। এরমধ্যেই শেষ হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল, এর প্রশস্ত ২৫০ মিটার ও গভীরতা ১৮ দশমিক ৫ মিটার। এছাড়া বাণিজ্যিক বন্দর বাস্তবায়নের জন্য চ্যানেলকে প্রশস্ত করা হয়েছে আরও ১০০ মিটার।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যতসব যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম বড় বড় জাহাজে করে এসেছে তা সব মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দরের চ্যানেল দিয়ে এসেছে। এই চ্যানেলের গভীরতা বেশি হওয়ায় বিশ্বের যেকোনো বাণিজ্যিক বড় জাহাজ এই বন্দরে নোঙর করতে পারবে এবং লোড-আনলোড করার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম জেটিটি নির্মাণ শেষে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাণিজ্যিক জাহাজ 'এমভি ভেনাস ট্রায়াম্প' প্রথমবারের মতো ভিড়েছিল।
পরবর্তীতে নির্মিত দ্বিতীয় জেটিতেও ২০২১ সালের ১৫ জুলাই জাহাজ ভিড়ে। গতবছরের ২৪ আগস্ট প্রকল্পের পাশেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে 'এমভি হোসেই ফরচুন' নামের জাহাজটি ভিড়ে।
এসময় চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, "সিডিউল অনুযায়ী আশা করছি ২০২৬ সালের মধ্যে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের টার্মিনালে প্রথম জাহাজ আনতে পারব।"