ট্রেনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এনআইডি বাধ্যতামূলক করার সুফল পাচ্ছেন যাত্রীরা
টিকেটের কালোবাজারি রুখতে এবং যাত্রাপথে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বহন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। যাত্রীরা রেলওয়ের এ উদ্যোগের সুফল ইতোমধ্যেই পেতে শুরু করেছেন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ মার্চ থেকে রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থায় মোট তিনটি সেবা অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে- জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে রেলওয়ের আন্তনগর ট্রেনের টিকিটিং ব্যবস্থা, টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিনের প্রবর্তন এবং অনলাইনের মাধ্যমে কেনা টিকিট অনলাইনে ফেরতের ব্যবস্থা করা।
'টিকিট যার, ভ্রমণ তার' স্লোগানকে সামনে রেখে ট্রেনে সেবার মান উন্নতকরণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও যাত্রীরা এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট থেকে জানা যায় যে, এ পদক্ষেপের ফলে টিকিট সম্পর্কিত জালিয়াতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে।
একইসাথে অনলাইনে আগের তুলনায় সহজেই টিকিট কেনা যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কেনা কিংবা অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে টিকিট কেনার মতো বিড়ম্বনা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন যাত্রীরা।
অমিত হাসান অমিত নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে 'বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যান গ্রুপ' নামের একটি গ্রুপে বলেন, "এটা অবিশ্বাস্য! ঢাকা-কিশোরগঞ্জ আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট এখনো অনলাইন থেকে কেনা যাচ্ছে। অথচ আগে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই সকল টিকিট বিক্রি হয়ে যেত।"
রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন এক ফেসবুক পোস্টে ট্রেনে ভ্রমণ করতে এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করার ঘোষণার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকে ধন্যবাদ জানান।
সরকারের সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, "আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টা। এখনো ১ মার্চের ঢাকা-চট্টগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট (বিশেষ করে এসি টিকেট) অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। সদিচ্ছা থাকলে সব সম্ভব। দরকার শুধু মনোবল শক্তি আর ভালবাসা।"
ফেসবুকে আরেক যাত্রী রশিদ ইকবাল পোস্ট করে জানান, "এখন সময় সকাল ১০ টা ৪০ মিনিট। নিশানগর এক্সপ্রেসের টিকেট এখনো পাওয়া যাচ্ছে। কয়েকদিন আগেও অনলাইনে বিক্রি শুরু হওয়ার মুহূর্তের মধ্যেই টিকেট শেষ হয়ে যেত।"
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এক নির্দেশনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আগামী ১ মার্চ থেকে প্রত্যেক যাত্রীকে চিহ্নিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের কপি সাথে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।
অনলাইনে 'রেল সেবা' অ্যাপ, ওয়েবসাইট (https://eticket.railway.gov.bd/) অথবা এসএমএসের মাধ্যমেই এ রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। বিদেশিদের ক্ষেত্রে, রেজিস্ট্রেশন করার জন্য পাসপোর্ট নম্বর এবং ছবির প্রয়োজন হবে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এক প্রেস কনফারেন্সে জানান, "সবগুলো সুবিধা ১ মার্চ থেকে চালু হবে। 'টিকেট যার, ভ্রমণ তার' স্লোগানের মাধ্যমে যাত্রীসেবা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।"
তিনি আশা করছেন নতুন সুবিধাগুলোর মাধ্যমে টিকেট ছাড়া ভ্রমণ এবং ব্ল্যাক মার্কেটে টিকেট বিক্রি বন্ধ হবে।
এছাড়াও অনলাইনে রিফান্ড পাওয়ার সুযোগ থাকায় এখন যাত্রীদেরকে স্টেশনে আসতে হবে না। 'রেল সেবা' অ্যাপ কিংবা রেলওয়ে টিকেটিং পোর্টাল থেকেই রিফান্ড সংগ্রহ করা যাবে।