উন্নত বাংলাদেশের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে: র্যাবের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৬ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের দিকে বাংলাদেশের যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করার জন্য দেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রমজান মাসের আগে কেউ যেন খাদ্য মজুদ এবং খাদ্যে ভেজাল দিতে না পারে এবং সমাজ থেকে মাদকের অপব্যবহার, কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি এবং সাইবার অপরাধ নির্মূলে আরও মনোযোগী হতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিশেষ করে র্যাবকে সজাগ থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু করবো। এখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেই প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যই দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা দরকার। দেশের উন্নয়ন দরকার এবং সেক্ষেত্রে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা বাজায় রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার (১৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদর দপ্তরে র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান সুন্দরবনে সন্ত্রাসবাদ জঙ্গিবাদ এবং জলদস্যুতা মোকাবেলায় র্যাবের তৎপরতার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যথাযথ দায়িত্বশীলতা, কার্যকারিতা এবং সক্রিয়তার সাথে এই বাহিনী অতীতের মতো ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় থাকাকালীন অগ্নি সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপতৎপরতা মোকাবেলা করেও তাঁর সরকার দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পেরেছে বলেই আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। কাজেই সেকথা মাথায় রেখেই সবাইকে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এদেশের প্রতিটি শান্তিপ্রিয় নাগরিকের কাছে আজকে এলিট ফোর্স র্যাব নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। 'বাংলাদেশ আমার অহংকার' এই মূল মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দিপ্ত হয়ে জনগণ ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে ভবিষ্যতেও এই বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্বশীল, কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে তুলবো, স্মার্ট অর্থনীতি হবে স্মার্ট বাংলাদেশে। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ বাস্তবায়ন করাটাই আমাদের লক্ষ্য।"
পাশাপাশি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কীভাবে গড়ে উঠবে সেজন্য 'ডেল্টা প্ল্যান-২১০০' তাঁর সরকার দিয়ে যাচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে শান্তি-শৃঙ্খলা একান্তভাবে দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "কিছু লোক থাকবেই সবসময় বিরোধিতা করতে। আর মাঝে মাঝে কিছু উল্টা-পাল্টা কথাও বলবে। এগুলো কানে না নিয়ে নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে, আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে আমরা আমাদের দেশের কল্যাণে সঠিক কাজ করছি কি না সঠিক পথে আছি কি না, এই চিন্তাটা নিজেই করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।"
শেখ হাসিনা বলেন, "আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে যদি আমরা এগিয়ে যাই, অবশ্যই বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া কেউ বন্ধ করতে পারবেনা। আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবেই গড়ে তুলবো।"
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে র্যাবের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়।