জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন
৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
দিনের প্রথম প্রহরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর পরপরই সকাল থেকে হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।
এর আগে, ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় শহীদদের স্মৃতির স্মরণে কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করেন তারা। শেষে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বহিতে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদ উপনেতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর একে একে জাতীয় সংসদের স্পিকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর একে একে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবি সংগঠন, বিভিন্ন সরকার-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অন্য হাজারো মানুষের মত এদিন সকালে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আহসান হাবীব।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, "আমাদের শিশুরা স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এই বিষয়গুলোর সঙ্গে খুব বেশি পরিচিত না। বাবা-মা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, বিষয়গুলোর সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আমরা যদি তাদের না জানা তারা এই চেতনাকে নিজেদের মধ্যে মনেপ্রাণে ধারণ করতে পারবে না। তাই সন্তানদের নিয়ে বিশেষ এই দিনগুলোতে চেষ্টা করি এখানে আসার, যাতে করে তারা অনুপ্রাণিত হয়।"
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আগত মো. আইনুদ্দিন নামে পঞ্চাশোর্ধ আরেক দর্শনার্থী টিবিএসকে জানান, "মুক্তিযুদ্ধের যেই গৌরবের কথা আমরা বলি, তার শিকড়ে রয়েছে এই দিনটি। সুতরাং এই দিনটিতে এখানে আসতে না পারলে নিজের কাছে ভালো লাগে না। আজ এখানে আসতে পেরে, পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে ভালো লাগছে।"
তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর জাতীয় স্মৃতিসৌধে লোকসমাগম তুলনামূলক কম লক্ষ্য করা গেছে। সকালের দিকে লক্ষ্যণীয় উপস্থিতি দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ১০টার পর থেকেই লোকসমাগম উল্লেখযোগ্য হারে কমতে দেখা যায়।
মূলত রমজান মাস হওয়ার কারণে এবার স্মৃতিসৌধে লোকসমাগম তুলনামূলক কম বলে মনে করছেন আগত দর্শনার্থীরা।