রূপপুরের চালানবাহী রুশ জাহাজের কাছ থেকে সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশি দুই জাহাজ
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জামবাহী রুশ জাহাজটি সম্প্রতি বাংলাদেশের পতাকাবাহী দুটি জাহাজের কাছে সরঞ্জাম সরবাহ করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ অপরাজিতা এবং সেজুতি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সরঞ্জামগুলো গ্রহণ করে এবং খালাসের জন্য মোংলায় ভেড়ে।
বাংলাদেশ ও ভারতের বন্দরে নোঙরের অনুমতি না পেয়ে প্রায় তিন মাস সাগরে ঘোরার পর এখন দেশে ফিরে যাচ্ছে রুশ জাহাজ উরসা মেজর।
মেরিন ট্র্যাফিক ইন্টেলিজেন্সের তথ্যমতে, রাশিয়ার জাহাজটি বর্তমানে ল্যাকাডিভ সাগর হয়ে আরব সাগরের দিকে এগোচ্ছে; ধারণা করা হচ্ছে আগামী ৪ এপ্রিল জাহাজটি রাশিয়ার নোভোরোসিস্ক গিয়ে পৌঁছাবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা উরসা মেজর নামের জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে এর আগেই গত ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, জাহাজটি আসলে উরসা মেজর নয়। এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজ স্পার্টা-৩।
ফলে মার্কিন আপত্তির ভিত্তিতে জাহাজটির বাংলাদেশের বন্দরে প্রবেশের অনুমতি বাতিল করা হয়।
পরে জাহাজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে যায়। কিন্তু সেখানেও সরঞ্জাম খালাসের জন্য ভারতের অনুমতি পায়নি রুশ জাহাজ।
পরে ১৫ জানুয়ারি চীনের দিকে রওনা দেয় ওই জাহাজ। সেদেশের যেকোনো বন্দরে সরঞ্জাম খালাসের জন্য ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায় জাহাজটি। তবে চীনে না গিয়ে গত ১০ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাহাজটি দুটি বাংলাদেশি জাহাজে মেশিনারিজ সরঞ্জাম স্থানান্তর শুরু করে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মিডিয়া উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৬ মার্চ এমভি অপরাজিতা বাংলাদেশের মোংলা সমুদ্র বন্দরে প্রায় ১,২০০ টন সরঞ্জাম নিয়ে আসে।
এর আগে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়া থেকে প্রকল্পের জন্য ২,৭০০ টন সরঞ্জাম দুটি পৃথক জাহাজে করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
রাশিয়ার রোসাটম স্টেট কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রূপপুর প্রকল্পের ডিজাইনার এবং ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে। ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মিত হচ্ছে এই প্রকল্পের আওতায়।
কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে মোট ২,৪০০ মেগাওয়াট অবদান রাখবে এই প্রকল্প। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চলতি বছরের মধ্যে এবং দ্বিতীয় ইউনিট আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৪ নাগাদ গ্রিডে সংযুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।