বাতাসে পোড়া গন্ধ আর হতাশার গুঞ্জন: এক আগুনে নিঃশেষ সব আশা
জ্বলন্ত অঙ্গার, ছাই, পুড়ে যাওয়া দোকানের শূন্যস্থান; সবকিছু মুহূর্তের মধ্যে ভস্মীভূত — বঙ্গবাজারের মার্কেটে আগুন নেভার পর এখন ধ্বংসযজ্ঞ স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ছে।
আগুনে কমপক্ষে ৩৬ জন মানুষ আহত হয়েছেন। প্রায় ৩,৫০০ দোকান পুড়ে গেছে। আনুমানিক ৫,০০০ ব্যবসায়ী এ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কয়েক হাজার মানুষ তাদের জীবিকার জন্য বঙ্গবাজারের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন; ঈদের সময় একটু ভালো বিক্রিবাট্টা, বাড়তি আয়ের আশা এক আগুনেই নিঃশেষ হয়ে গেল।
বঙ্গবাজারের কাছে ইসলামিয়া মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রনির ২৫-৩০ লাখ টাকার কাপড় এখন অঙ্গারে পরিণত। '১২ লাখ টাকার লোন আছে। সকালে কাপড় কিনতে যাব বলে দোকানের ক্যাশবাক্সে চার লাখ টাকা রেখেছিলাম। এখন ধার শোধ করব কেমনে?' তিনি বলেন।
'আমার দোকান পুড়ত না। ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণে ইসলামি মার্কেটেও আগুন পৌঁছে যায়,' তার দাবি।
যদিও আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিন্তু তা-তে ব্যবসায়ীদের আর শেষ রক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে শুরু হওয়া আগুন ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নেভাতে সক্ষম হয় উদ্ধারকারী বাহিনীগুলো।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তরের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দুপুর ১২.৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন ইউএনবিকে জানিয়েছিলেন, পুরোপুরি আগুন নেভাতে আরও এক ঘণ্টা সময় লাগবে।
তিনি জানান, বাতাস ও মানুষের ভিড় তাদের কাজকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
২০১৯ সালের ২ এপ্রিল বঙ্গবাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ টাঙানো হয়েছিল বলে জানান তিনি। আগুনের কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সকাল ছয়টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন ধরে যায় বঙ্গবাজারে। এরপর ধীরে ধীরে ছড়াতে শুরু করে।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করে। আএসপিআর জানিয়েছে, অগ্নিনির্বাপণ কাজে অংশগ্রহণ করেছে সেনাবাহিনীর একটি দলও।
এছাড়া বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার এবং নৌবাহিনীর একটি দলও আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করে।
আগুন নেভাতে গিয়ে কমপক্ষে পাঁচজন অসুস্থ হয়ে যান।
বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি।