‘১০ লাখ টাকা ঋণ, কীভাবে শোধ করবো!’- বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সজিব হোসেন
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিজের পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী মোহম্মদ সজিব হোসেন। দেখছিলেন দোকানের ভিতরে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া জিনিসপত্র।
"ঈদে বিক্রির জন্য বাকিতে মাল এনেছিলাম, এর পাশাপাশি ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছি; সব মিলে ১০ লাখ টাকা ঋণ আছে। এই টাকা এখন কীভাবে শোধ করবো," কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানালেন সজিব।
"১৭ বছর ধরে তিল তিল করে আমার দোকানটা সজিয়েছিলাম। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল। কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবো," যোগ করেন তিনি।
পরিবার নিয়ে ঢাকার কেরানিগঞ্জে থাকেন সজিব হোসেন। মঙ্গলবার আগুন লাগার খবর পান ভোর সাড়ে ৬টার দিকে। এসে দেখেন আগুন চলে এসেছে প্রায় তার দোকান পর্যন্ত। সেই সময়ে ক্যাশে থাকা টাকাগুলো আর কিছু মাল বের করতে পেরেছিলেন।
সজিব বলেন, "করোনায় আমাদের ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় দুই জন কর্মচারি ছাটাই করি। এরপর থেকে আমার ভাইকে সঙ্গে নিয়েই দোকান চালাতাম।"
পুড়ে যাওয়া বাচ্চাদের পোশাক উঠিয়ে দেখাচ্ছিলেন আর কাঁদছিলেন সজিব। "আমি বাচ্চাদের ভালো মানের পোশাক বিক্রি করতাম। বঙ্গবাজারের মূল মার্কেটে তানভির গার্মেন্ট নামে ২০৭৯ নম্বর দোকান ছিল আমার। আমার প্রায় ৩৭ লাখ টাকার মাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।"
"আমার পরিবার এই দোকানের ইনকামে চলে; আমি এখন কীভাবে সংসার চালাবো," যোগ করেন তিনি।
সজিবের সঙ্গে আলাপকালে তাকে বাকিতে মাল দিয়েছেন এমন একজন ব্যবসায়ীও উপস্থিত হন। এ ব্যবসায়ীর নাম মোহম্মদ রনি; কেরানিগঞ্জের রনি গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী।
মোহাম্মদ রনি জানান, "আমি তার (সজিব হোসেন) কাছে এক লাখ টাকার পোশাক বাকিতে বিক্রি করেছি। কথা ছিল ঈদে বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করবে।"
এছাড়া, বঙ্গবাজার মার্কেটে তার নিজের প্রায় ৬০ লাখ টাকার পোশাক বাকি রয়েছে বলে জানান রনি। কীভাবে এখন এই টাকা ফেরত পাবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না এই ব্যবসায়ী।
সজিব জানান, অনেকে তার কাছ থেকেও বাকিতে মাল নিয়ে যেতেন। বাকির সেই খাতাও পুড়ে গেছে আগুনে। ফলে এখন পাওনা আদায় নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
ক্ষতিতে পড়া ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ক্ষতিগ্রস্ত এই ব্যবসায়ী।