ঈদের অগ্রিম টিকেট: নীরব কামলাপুর, অনলাইনে বিক্রি শুরুর কয়েক মিনিটেই শেষ প্রথম দিনের টিকেট
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে ট্রেন ও বাসের ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি। আগে ঈদযাত্রায় রেলের অগ্রিম টিকেট নিতে রাত থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকত হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এবার শতভাগ টিকেট অনলাইনে বিক্রি করায় অগ্রিম টিকেট কাটতে কমলাপুর স্টেশনে ছিল না মানুষের ভিড়।
রেল মন্ত্রণালয় এ বছর ঈদযাত্রার সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করছে। শুক্রবার ঈদযাত্রার প্রথম দিনে ১৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়।
তবে অনলাইনে টিকেট কিনতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে টিকেট-প্রত্যাশীদের। 'রেলসেবা' নামক অ্যাপ থেকে সকাল আটটায় টিকিট বিক্রি শুরু হবার ১ মিনিটের মাথায়ই ৮ হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। প্রথম দিনের ২৪ হাজার ৭২৫টি টিকিট বিক্রি হতে সময় লাগে মাত্র ৫ মিনিট।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, অনলাইনে টিকিট বিক্রি সহজ হওয়ায় যাত্রীরা ঘরে বসেই টিকিট পাচ্ছেন।
রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের ডিআরএম শফিকুর রহমান বলেন, 'অনলাইনে সব টিকিট দেওয়ায় যাত্রীদের ভোগান্তি কমে গেছে। এখন আর কাউকে স্টেশনে এসে রাত জেগে লাইনে দাঁড়াতে হয় না। আমাদের পরিশ্রমও অনেক কমে গেছে।'
সকাল আটটার পরে অ্যাপে ঢুকে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, লালমনিরহাটসহ অধিকাংশ গন্তব্যের কোনো টিকেট নেই। এছাড়া ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী পদ্মা, সিল্কসিটি, ধুমকেতু ও বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেটও শেষ হয়ে যায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই।
ময়মনসিংহ, জামালপুর রুটে চলাচলকারী অগ্নিবীণা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জামালপুর ও তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে অবিক্রীত টিকেট ছিল মাত্র ৫ টি।
বাংলাদেশ রেলওেয়ের যাত্রীদের ফেসবুক গ্রুপ 'বাংলাদেশ রেলওয়ে হেল্পলাইন'-এ জোবায়ের হোসেন নামের এক যাত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, '১ মিনিটে সব টিকিট শেষ। কী করে সম্ভব?'
জোবায়েরের পোস্টে কবির হোসেন নামের এক যাত্রী কমেন্ট করে দাবি করেছেন, উত্তরবঙ্গের টিকেটের চাপ বেশি, তাই টিকেট তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়, চট্টগ্রাম বা অন্যন্য জেলার টিকেট থাকে।
এছাড়া সার্ভারে ঢুকতে সমস্যার কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
রুবেল নামের একজন বলেন, 'আমি কয়েকবার চেষ্টার পর অনলাইনে টিকিট কিনতে পেরেছি। বেশিরভাগ সময় সার্ভারে সমস্যা করতে দেখা গেছে।'
তবে রেলের টিকেট বিক্রির দায়িত্বে থাকা সহজ জেভির নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ দেবনাথ বলেন, 'আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। সার্ভার স্মুদ ছিল। প্রথমদিকে প্রতি এক মিনিটে এক হাজার করে টিকেট বিক্রি হয়েছে।'
বাসে ১৯-২১ তারিখের টিকেটের চাপ বেশি
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রির প্রথম দিনে কোম্পানিগুলো ১৯ থেকে ২১ তারিখের টিকেটের চাহিদা বেশি পাচ্ছে।
শ্যামলী পরিবহনের গাবতলীর কাউন্টার ম্যানেজার প্রভাত রায় জানান, 'আজ ভালোই চাহিদা ছিল। আমরা ১৯ তারিখ রাত থেকে ২১ তারিখ দুপুর পর্যন্ত চলা বাসগুলোতে যাত্রীদের বেশি আগ্রহ দেখছি।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে চলা সবগুলো বাসের টিকেট এখনও বিক্রি হয়নি।
গ্রিনলাইন পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুস সাত্তার বলেন, 'আমাদের ১ তারিখ থেকেই অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। আমরা ১৯ থেকে ২১ তারিখ এই তিনদিনের চাহিদা বেশি পাচ্ছি। এর আগে ও পরের দিনগুলোর সিটে কোনো চাহিদা নেই।'
তবে হানিফ ও ঈগলসহ কিছু বাস সেবা প্রদানকারী কোম্পানি তাদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুক্রবার শুরু করেনি। তারা শনিবার থেকে বিক্রি শুরু করবে বলে জানা গেছে।