বিদেশি কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে ঢাকায় ভিসাকেন্দ্র খোলার কথা ভাবছে গ্রিস
বিদেশি কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে শীঘ্রই থার্ড পার্টি ব্যবস্থার অধীনে ঢাকায় একটি ভিসাকেন্দ্র খোলার কথা বিবেচনা করছে গ্রিস। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য জানান বিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিশ্বজিৎ কুমার পাল বলেন, "বর্তমানে গ্রিসে যেতে চাইলে বাংলাদেশিদেরকে ভারতের গ্রিক দূতাবাসে যেয়ে ভিসার আবেদন করতে হয়, যা বেশ সময়সাপেক্ষ। এ প্রক্রিয়াটি সহজ করার জন্য আমরা ঢাকায় একটি ভিসাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য গ্রিক সরকারকে অনুরোধ করেছি।"
"আমাদের অনুরোধের জবাবে গ্রিস কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে জানিয়েছে, তারা থার্ড পার্টির সহায়তায় ঢাকায় ভিসাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে," বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, "এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শীঘ্রই আসবে। এরপরই আমরা বলতে পারব কখন থেকে শ্রমিকরা সরাসরি গ্রিসে যেতে পারবে।"
এর আগে, বাংলাদেশ থেকে বছরে কমপক্ষে ৪ হাজার কর্মী নিয়োগের জন্য একটি চুক্তি সাক্ষর করে গ্রিস। তবে, এ চুক্তি সাক্ষরেরও এক বছর পেরিয়ে গেলেও এ দেশে গ্রিসের দূতাবাস না থাকায় এক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
আনুষ্ঠানিকভাবে হেলেনিক রিপাবলিক নামে পরিচিত গ্রিস ও বাংলাদেশ ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।
এর অধীনে ইউরোপীয় দেশটি ৫ বছরের অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিটে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমী কৃষি শ্রমিক নিয়োগ করবে। চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে খাতের পরিসর বাড়ানো হতে পারে।
বর্তমানে হেলেনিক প্রজাতন্ত্রের পর্যটন এবং আতিথেয়তাসহ অন্যান্য কিছু খাতে বিদেশি কর্মী প্রয়োজন।
হসপিটালিটি খাতে প্রয়োজন ৮০ হাজার বিদেশি কর্মী
গ্রিসের স্থানীয় মিডিয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্যানহেলেনিক হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের অনুমান অনুযায়ী ২০২৩ সালে গ্রিসের পর্যটন শিল্পের হসপিটালিটি খাতে ১ লাখেরও বেশি চাকরি খালি থাকবে।
এরমধ্যে কমপক্ষে ওয়াশিং ও ক্লিনিং এর কাজের জন্য প্রয়োজন ৮০ হাজারেরও বেশি বিদেশি কর্মী। ফলে এ খাত সংশ্লিষ্টরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং বলকান দেশগুলো থেকে জনশক্তি আমদানির তাগিদ দিচ্ছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গ্রিক দৈনিক কাথিমেরিনি।
আইনি মর্যাদার আবেদন করেছেন ৬ হাজার বাংলাদেশি
এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসের মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০ হাজার নাগরিক বর্তমানে হেলেনিক প্রজাতন্ত্রে বসবাস করছেন এবং ধারণা করা হয়, তাদের প্রায় অর্ধেকের কোন আইনি মর্যাদা নেই।
দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও গ্রিস অনথিভুক্ত বাংলাদেশীদের বৈধকরণের সুবিধার্থে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ছয় মাসের এ বৈধকরণ প্রক্রিয়া চলতি বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে।
বিশ্বজিৎ কুমার পাল টিবিএসকে বলেন, "আমরা ভেবেছিলাম অবৈধ বাংলাদেশির সংখ্যা কমপক্ষে ১৫ হাজার হবে। কিন্তু বৈধকরণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মনে হচ্ছে সংখ্যাটা এৎ বেশি হবে না।"
চলতি বছরের ২৮ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে বৈধতার আবেদন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, "গ্রিসকে ইউরোপের অন্যান্য দেশে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই আমরা অনুমান করছি বেশকিছু অবৈধ বাংলাদেশি গ্রিস ছেড়ে অন্য দেশে চলে গেছেন।"