গাজীপুর সিটি নির্বাচন: ‘ঋণখেলাপি’ জাহাঙ্গীর বললেন মনোনয়ন বাতিল অগণতান্ত্রিক
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মো. জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনিসহ মেয়র পদে মোট ৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
আজ রোববার (৩০ এপ্রিল) সকালে মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘোষণা দেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।
এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক ও অবিচার উল্লেখ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যেহেতু ব্যাংক টাকা পাবে ব্যাংকে টাকা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা (নির্বাচন কমিশন) সিআইবির নাম দিয়ে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনের এখানে যে নিরপেক্ষতা ছিল, সেখান থেকে সরে গেছে। কোন অদৃশ্য চাপে তারা এটা করেছে আমি জানি না, কিন্তু আমি ন্যায়বিচার চাই, আমি আপিল করব। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব। আমি লড়াই করে যাব।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া অন্য দুই প্রার্থী হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ অলিউর রহমান ও মো. আবুল হোসেন। তবে মেয়র পদের জন্য জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আজ সকাল থেকেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদে এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন তার সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি নিউ নিটওয়্যার কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও তার আইনজীবী রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, জামিনদার কখনো ঋণখেলাপি হয় না। তাছাড়া খেলাপি ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান ঋণ তফসিলীকরণের জন্য ইতিমধ্যে কিস্তির টাকা জমা দিয়েছেন এবং আবেদন করেছেন।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, যেই ঋণের কথা বলা হচ্ছে তা ইতোমধ্যে পুনঃতফসিল করে এমননি গত ১১ ও ১৬ তারিখে এর টাকাও পরিশোধ করেছে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, "আমি (জাহাঙ্গীর আলম) একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের জমি বন্ধক রেখেছিলাম। আমি ওই টাকা নিজে নেইনি এবং প্রতিষ্ঠানটি ওই টাকা পরিশোধ করেছে। এরপরেও আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে যা অগণতান্ত্রিক। আমি কমিশনের কাছে নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার পাইনি।"
এসময় তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানান।
তবে ফরিদুল ইসলাম বলেন, মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও যেহেতু সময় আছে, মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আপিল করতে পারবেন।
এর আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন জাহাঙ্গীর আলম।
প্রসঙ্গত, আজ সকাল থেকেই গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলছে। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে। আগামী ২৫ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানাবিধ অভিযোগে ২০২১ সালের নভেম্বরে তাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।
যদিও পরে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ।