নির্বাচিত হলে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করব: জায়েদা খাতুন
নির্বাচিত হলে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবেন বলে জানিয়েছেন আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সাবেক মেয়র (বরখাস্ত) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।
আজ শনিবার গাজীপুরের নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম মায়ের পাশে ছিলেন।
জায়েদা খাতুন বলেন, 'একটা মিথ্যা, ভুয়া অভিযোগে আমার ছেলেকে ১৮টা মাস সবকিছু থেকে দূরে রাখা হয়েছে, সবকিছু স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে, সবকিছু লুটপাট করে নেওয়া হয়েছে। এই কারণে আজ আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি। আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে আমার ছেলে (জাহাঙ্গীর) যে কাজগুলো করেছে, আর রাস্তাঘাটের যে কাজগুলো পড়ে আছে, অসমাপ্ত কাজগুলো ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আমি সমাপ্ত করব।
এ সময় নির্বাচনে জয়ের আশা প্রকাশ করে জায়েদা খাতুন বলেন, 'গাজীপুর সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডের জনগণই আমার পাশে আছে ইনশাআল্লাহ। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, কোনো কারচুপি-দুর্নীতি না করা হয়, তাহলে জনগণ আমার পাশে আছে, তারা আমাকে নির্বাচিত করবে।'
উল্লেখ্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ছেলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক মেয়র (বরখাস্ত) জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র নিজ হাতে জমা দেন ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা পৃথকভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
পরবর্তীতে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে জামিনদার হিসাবে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। আপিল কর্তৃপক্ষও জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিলের আদেশ বহাল রাখে।
তবে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করায় জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কোনো বাধা নেই। যদিও মনোনয়ন পত্রের বৈধতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা রয়েছে জাহাঙ্গীর আলমের।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, নির্বাচনে জায়েদা খাতুনের এই প্রার্থিতা জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচনী কৌশলমাত্র। প্রার্থিতা নিয়ে ঝামেলা হওয়ার আশঙ্কা থেকেই সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পাশাপাশি তার মা জায়েদা খাতুনও প্রার্থী হয়েছেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে যেই প্রার্থীই নির্বাচনে জয়ী হোক না কেন, তাকে বেশ শক্ত ভোটযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন নগরীর বাসিন্দারা। কেননা আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানের বিপরীতে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজনের বেশ প্রভাব রয়েছে নগরীতে।
এর মধ্যে সাবেক মেয়র (বরখাস্ত) জাহাঙ্গীর আলমের যেমন প্রভাব রয়েছে, তেমনি নগরীতে বেশ শক্ত অবস্থান রয়েছে সরকার পরিবারেরও। তাছাড়াও জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিনেরও বেশ ভালো সমর্থন রয়েছে এলাকায়।
বিএনপি যদিও এই নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেয়নি, কিন্তু গাজীপুরের সরকার পরিবার থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি। তিনি কারাবন্দী বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে ও হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা। হাসান উদ্দিন সরকার গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন।