সাতমসজিদ সড়কের গাছ কাটার প্রতিবাদ আন্দোলনকারীদের, পুনরায় রোপণের দাবি
ধানমণ্ডি সাত মসজিদ সড়ক বিভাজকের গাছ কাটা বন্ধ এবং সেখানে পুনরায় বৃক্ষ রোপণের দাবি জানিয়েছে সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন কমিটি।
আজ সোমবার (৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
আমিনুর রাজীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-র সভাপতি সুলতানা কামাল, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, লেখক পাভেল পার্থ, নগরবিদ আমিন মোহাম্মদ খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রমুখ।
আন্দোলনের সমন্বয়কারী আমিনুর রাজী বলেন, 'সাত মসজিদ সড়কে আগ্রাসী প্রজাতির গাছ খুব একটা নেই। গাছগুলো কোনোভাবেই সড়ক ও নাগরিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ নয়। এসব গাছকে রেখেই সড়ক সম্প্রসারণ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু, তা করা হয় নি; রাতের আঁধারে গাছগুলো কাটা হয়েছে'।
তিনি আরো বলেন, সড়ক সম্প্রাসারণের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের কাছে গাছ কাটার অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে সঠিক অনুমোদনপত্র দেখাতে পারেননি। তারা কেবলমাত্র ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দেয়া কাজ শুরুর একটি নির্দেশপত্র দেখান, যেখানে কোথাও গাছ কাটার নির্দেশনা নেই। বলা যেতে পারে, অবৈধভাবেই এই গাছগুলো কাটা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ভাষ্য,গাছগুলো সড়কদ্বীপের জন্য বেমানান ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাহলে এই সড়কে যদি ভুল করে গাছ লাগানো হয়ে থাকে, সে ভুল করা কর্মকর্তাকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে'।
বাপার সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, বর্তমানে এ রাস্তায় সর্বসাকূল্যে ৩০টি গাছ আছে। সাতমসজিদ সড়কের ঐতিহ্য হিসেবে গাছগুলো রক্ষায় আমরা কাজ করছি, রাতে পাহারা দেওয়া হচ্ছে । আমাদের মূল দাবি একটাই, এই সড়কের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং যেগুলো কাটা হয়েছে সেসব স্থানে আবার নতুন করে গাছ লাগাতে করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো:
সাতমসজিদ সড়কদ্বীপে গাছ কাটা অবিলম্বে বন্ধ করা এবং কেটে ফেলা গাছগুলোকে স্থানীয় প্রাজতি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা। গাছ লাগানোর পর তা আবার কেটে ফেলার রেওয়াজ বন্ধ করতে হবে। নগরের বনায়ন, গাছ রক্ষা এবং কাটার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
সিটি করপোরেশন এলাকায় যেকোন প্রকল্প গ্রহণে পরিকল্পনা প্রতিবেদন তৈরি; প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন এবং সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনা শাখার যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
পার্ক,উদ্যান, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের উন্নয়ন পরিকল্পনার নকশা জনগণের সামনে উপস্থাপন করে এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবিদসহ উদ্যানবিদদের যথাযথ মতামত গ্রহণ সাপেক্ষে পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিদ্যমান গাছ ও সবুজকে অক্ষুন্ন রেখে উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
নগর এলাকায় গাছ কাটার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর আর বন অধিদপ্তরের যথাযথ ভূমিকা পালনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রকৃতি-ভিত্তিক পরিকল্পনাকে প্রাধান্য দিতে হবে।