ভারত থেকে এসেছে অনুদানের ২০ রেল ইঞ্জিন
পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০টি ডিজেল চালিত ব্রডগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) হস্তান্তর করেছে ভারত।
মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেলে ভারতের গেদে স্টেশন থেকে বাংলাদেশের দর্শনা স্টেশনে অনুদানের এসব লোকোমোটিভ প্রবেশ করে।
বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং ভারতের রেলপথ, যোগাযোগ, ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে লোকোমোটিভ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এটি ভারতের বন্ধুত্বের প্রতীক এবং রেল যোগাযোগের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
তিনি বলেন, ভারতের রেল ব্যবস্থাকে ব্রডগেজে রূপান্তর করা হয়েছে। "বাংলাদেশও এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ধীরে ধীরে সব লাইন ব্রডগেজ হবে।"
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, বহুমুখী সংযোগ বৃদ্ধি দুই দেশের সরকারেরই অগ্রাধিকারে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ দুটি দেশের পাশাপাশি সমগ্র অঞ্চলের অর্থনীতিকে বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই রেল সংযোগের।
ভারতের রেলমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় (১০ বিলিয়ন ডলারের) উন্নয়ন সহযোগী।
ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের অধীনে রেলওয়ে খাতের ৩০০ মিলিয়ন
ডলারের প্রকল্পগুলোর কাজ এরমধ্যেই শেষ হয়েছে। ১.৬৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের প্রকল্পগুলো বর্তমানে বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে ইঞ্জিন নির্বাচন করার সময় সেগুলো বাংলাদেশের রেলওয়ে ট্র্যাক, স্টেশন, সিগন্যাল সিস্টেমসহ সামগ্রিক রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে কি না তা বিবেচনা করা হয়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদনের পর নির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন, আমদানি ছাড়পত্র, শুল্ক, ভ্যাট এবং কর পদ্ধতি বিশদভাবে যাচাই করে ব্রডগেজ ইঞ্জিনগুলো দেশে আনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ পেয়েছিল। আগের লোকোমোটিভগুলো বর্তমানে পশ্চিম রুটে চলাচল করছে।
হস্তান্তরের সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির এবং ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে লোকোমোটিভ
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের বহরে মিটারগেজ ও ব্রডগেজের ৩১৫টি লোকোমোটিভ রয়েছে।
বর্তমানে এসব ইঞ্জিন দিয়ে প্রায় ৪০০টি ট্রেন পরিচালনা করছে রেলওয়ে।
তবে বর্তমানে চলমান ইঞ্জিনের সংখ্যা মাত্র ২৭১টি। এছাড়া বেশিরভাগ ইঞ্জিনই তাদের অর্থনৈতিক জীবনকালের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
রেলওয়ে ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক জীবনকাল ২০ বছর ধরা হয়ে থাকে। অথচ এসব ইঞ্জিনের বেশিরভাগের বয়স ৪০ পেরিয়ে গেছে।
ফলে বেশিরভাগ ট্রেনই এসব পুরনো ইঞ্জিন নিয়ে কাঙ্খিত গতিতে চলতে পারে না।