ক্যাশলেস পদ্ধতির ফলে একমাসে ৩৫০ কোটি টাকা খাজনা আদায়: ভূমি মন্ত্রী
গত ১৪ এপ্রিল থেকে জমির খাজনা আদায় পুরোপুরি অনলাইনের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে, ক্যাশলেস পদ্ধতিতে। ফলে শুধু একমাসে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা খাজনা আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, "২০২০-২১ অর্থবছরে মোট সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা খাজনা আদায় হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাত্র ২০ শতাংশ ভূমির খাজনা অনলাইনে আদায় হয়েছে। বাকি ৮০ শতাংশই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে অর্থাৎ হাতে গ্রহণ করা হয়েছে। সেই অর্থবছরে খাজনা আদায় বেড়ে প্রায় ৬৪১ কোটি টাকা হয়েছে। গত ১৪ এপ্রিল ক্যাশলেস সিস্টেম চালুর পর এককথায় বিপ্লব হয়েছে। একমাসে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। আমরা আশা করছি বছরে খাজনা আদায় ২০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।"
শনিবার (২৭ মে) চট্টগ্রামের ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসচেতনতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভূমি মন্ত্রী বলেন, "আমি জানি, মাঠ পর্যায়ে খাজনা আদায়ে অনেক অপব্যবহার হয়। এজন্য ঠিকভাবে আদায় হয় না। পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। পরিচ্ছন্নতা আনছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভূমি মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। এখন অনলাইনে সেবা গ্রহণ পাচ্ছেন মানুষ। আমরা ভূমি দখল স্বত্ব আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। দখলে থাকলেই ভূমির মালিক হওয়া যাবে না। এটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। আমি একটি সেমিনারে বলেছি, আমার আমলে হয়তো পর্যাপ্ত সময় পাবো না। অনেকে এটি নিয়ে সমালোচনা বলেছেন। এ আইন সংস্কারে দীর্ঘদিন কাজ করছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদে যাবে। আলোচনা হবে। আগামী সংসদ অধিবেশনে এ আইন তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি। চেষ্টা করে যাচ্ছি।"
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, জেলা কমিটির কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম সরোয়ার কামাল। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল স্বাগত বক্তব্য রাখেন। আর ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশন সংক্রান্ত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বোয়ালখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউদ্দিন।
এএল শাখার সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন মন্ত্রী
জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে তিনজন সেবা গ্রহীতা জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সেবা নিয়ে অনুভূতির কথা জানান। তারা সেবা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে এটি আসল চিত্র নয় বলে মন্তব্য করেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, "এই দুই-তিনজন লোক সেবা পাচ্ছেন। কিন্ত বেশিরভাগ মানুষ হয়রানির শিকার হন। সারাদেশেই ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে হয়রানি রয়েছে। জেলা প্রশাসক ভালো কাজ করছেন। কিন্তু আমি জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নই। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের খুব একটা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে আমি নিয়েছি। কোন অভিযোগ আসলে, আমরা তা তদন্ত করি। যে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে, তার পূর্ব কর্মস্থলের খবর নেওয়া হয়। আমরা মাঠ থেকে খোঁজখবর নিচ্ছি। অনিয়ম করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।"