ড. ইউনূসের করফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত, এনবিআরকে ১২ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা করফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ফলে এই নোবেলবিজয়ীকে ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত করফাঁকির জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ১২ কোটি টাকারও বেশি পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (৩১ মে) এ রায় ঘোষণা করেন।
করফাঁকি নিয়ে এটিই তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রথম রায়।
এর আগে, গত ২৩ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে রায়ের জন্য ৩১ মে দিন ধার্য করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আর ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
অ্যাটর্নি জেনারেলে এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, "তিনি (ড. ইউনূস) টাকা দান করেছেন। তাই কর অব্যাহতি পাবেন। আর আমরা বলেছি, কর অব্যাহতির যেসব কারণ উল্লেখ করা আছে, সেগুলোর মধ্যে তাঁরটি পড়ে না। এজন্য তাকে দানকর দিতে হবে। আদালত শুনেছেন।"
মামলা থেকে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একইভাবে, ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দানকর দাবি করে আরেকটি নোটিশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া, ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেওয়া হয়। দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের ওইসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন ড. ইউনূস। তার দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এই কর দাবি করতে পারে না।
তার এই মামলার শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালে খারিজ করে রায় দেন কর আপিল ট্রাইব্যুনাল। এরপর হাইকোর্টে তিনি পৃথক তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।
হাইকোর্ট তার মামলার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন।
এই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা হল।