এলডিসি থেকে উত্তরণে ঢাকাকে সহায়তার কথা জানালেন ডব্লিউটিও প্রধান
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণে বাংলাদেশকে সহায়তার কথা জানিয়েছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক ড. এনগোজি ওকোনজো-ইওয়েলা।
একইসঙ্গে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সাপ্লাই চেইন দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে স্থানান্তরের জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন বলেও জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ মন্তব্য করেন ডব্লিউটিও মহাপরিচালক।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড. এনগোজি বলেন, 'আমাদের নির্ধারিত নীতি রয়েছে। আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করব।'
ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক বলেন, তিনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলাপ করেছেন এবং বৈশ্বিক লজিস্টিকস বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে তাদের সাপ্লাই চেইন স্থানান্তরের জন্য উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।
'আমি তাদের বলেছি, কেন বাংলাদেশ নয়? আমরা বাংলাদেশে আরও সাপ্লাই চেইন তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছি', যোগ করেন তিনি।
এ সময় ড. ইউনূস বিশ্ব বাণিজ্য আলোচনায় গতিশীলতা আনার কথা উল্লেখ করে এনগোজির নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
তিনি আরও বলেন, দুঃশাসন ও অলিগার্কদের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবসায়িক চুক্তি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছিল। তাদের পতনের পর বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত।
তিনি বলেন, লাখ লাখ তরুণ ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে দক্ষ কর্মী নিয়ে বাংলাদেশ সহজেই অন্যতম বৃহৎ ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হয়ে উঠতে পারে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করছে এবং আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে জট কমিয়েছে।
ক্ষমতাসীন পরিবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা দুর্নীতিমূলক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে জড়িত ছিলেন জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, 'আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধেও লড়াই শুরু করেছি'।
ড. এনগোজি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় বাংলাদেশের তরুণদের মনোভাব তাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি লক্ষ্য করেছেন, তারা (তরুণ) সবচেয়ে শক্তিশালী বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে নজিরবিহীন উদাহরণ তৈরি করেছে।
সেইসঙ্গে দেশে স্থিতিশীলতা এবং বাংলাদেশকে আবারও বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার ক্ষেত্রে অধ্যাপক ইউনূসের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এনগোজি।
তিনি বলেন, আপনি স্থিতিশীলতার প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরে এসেছে।
বৈঠকে ড. এনগোজি বাংলাদেশকে মৎস্য ভর্তুকি চুক্তি অনুমোদনের আহ্বান জানান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানান।
ড. এনগোজি উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ সুবিধা সংক্রান্ত চুক্তিসহ ডব্লিউটিওর অন্যান্য আলোচনাধীন চুক্তি বাস্তবায়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশকে অনুরোধ করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) সমন্বয়ক লামিয়া মুর্শেদ এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম।