উনি কি ইন্তেকাল করেছেন: প্রশ্ন সিইসির
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম কি ইন্তেকাল করেছেন?- সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এ প্রশ্ন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
"আমরা যেটা দেখেছি, উনার কিন্তু রক্তক্ষরণ দেখিনি...ওনাকে পেছন থেকে ঘুষি মারা হয়েছে" জানিয়েছেন সিইসি।
আজ সোমবার (১২ জুন) খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
একটি দলের মেয়র প্রার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে, তাহলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ বলা যায় কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, "রক্তাক্ত... এখন সব কিছু তো আপেক্ষিক। উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা যেটা দেখেছি, উনার কিন্তু রক্তক্ষরণ দেখিনি। যতটা শুনেছি, উনাকে পেছন থেকে কেউ ঘুষি মেরেছে। উনার বক্তব্যও শুনেছি। উনি বলেছেন, যে ভোট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না। আমাকে আক্রমণ করা হয়েছে। এবং আমরা সঙ্গে সঙ্গে খবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি, ভোট কার্যক্রম ওই কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে কি-না। আমরা যে খবর পেয়েছি, ভোট কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়নি এবং উনাকে যে আহত করা হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং যে দায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবং দায়-দায়িত্ব নিরুপণ করার পর পুলিশ পদক্ষেপ নিয়েছে ইতিমধ্যে। আমরা আরো নির্ভরযোগ্য তথ্য পরবর্তীতে হয়তো পাব।"
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা হয়েছে, ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত আপনাদের কোনো তথ্য দিতে পারবো না। ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি, শুনেছি যে হাতপাখার প্রার্থীকে খানিকটা আঘাত করা হয়েছে। সেটা উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল। সে উত্তেজনা হয়তো এখনো পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি। আমাদের এখান থেকে বলা হয়েছে যে নির্বাচন উত্তর যেন কোনো উচ্ছৃঙ্খল আচরণ যেন করা না হয়। কারণ ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেও অনেক সময় এরকম ঘটনা ঘটে থাকে। সে পস্তুতি আমাদের আছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে প্রস্তুত আছে। এ ধরণের ঘটনা ঘটবে না।
দুই সিটিতে কত শতাংশ ভোট পড়েছে, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, খুলনায় যতটুকু তথ্য পেয়েছি এতে ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশ থাকার সম্ভবনা। এটা চুড়ান্ত নয়, কম-বেশি হতে পারে। সঠিক তথ্য এখনই দিতে পারবো না। তবে আনুমানিক যেটা বললাম বরিশালে আনুমানিক ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর কমবেশি হতে পারে।
আজকে আপনারা সবকিছু দেখেছেন, আমার যে পর্যবেক্ষণ তাতে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট সার্বিকভাবে সুন্দরভাবে সূচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছি যে সার্বিকভাবে ভোটটি বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন বেশ গুরুত্ব বহন করেছে। সার্বিকভাবে ভোট বেশ সুশঙ্খল আনন্দমুখর পরিবেশে হয়েছে।
বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ফয়জুল করীমের বরাত দিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতউল্লাহ জানান, ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে ৩০ থেকে ৪০ জন নৌকা সমর্থক তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তারা লাঠিসোঁটা ও পাথর ব্যবহার করেন। তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এ সময় আহত হন।
চরমোনাই পীর সৈয়দ রেজাউল করীমের ছোট ভাই হচ্ছেন সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। বরিশালে তার ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকার পল্টনে ইতিমধ্যে প্রতিবাদ মিছিল করেছে তার সমর্থকরা।