প্রথম দিন বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক করল ইইউ নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর ছয় সদস্যের নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন রোববার সকালে ঢাকায় আসার পর এর কার্যক্রম শুরু করেছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আবহ বোঝার জন্য দুই সপ্তাহের সফরে ঢাকায় আসা এ প্রতিনিধিদল ঢাকায় ইইউ'র রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির গুলশানের বাসভবনে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক কূটনৈতিকসূত্রে জানা গিয়েছে।
বৈঠকে ফ্রান্স, ইতালি, নরওয়ে, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডাসহ আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (১০ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইইউ মিশনের কর্মকর্তাদের সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এছাড়া দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও একাধিক বৈঠক করবে ইউরোপীয় এ দলটি।
ইইউ প্রতিনিধি দল ও ক্ষমতাসীন দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির মধ্যে একটি বৈঠক চার্লস হোয়াইটলির বাসভবনে সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ।
এছাড়া ইইউ দলটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আগামী ১৫ জুলাই দেখা করবেন বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর সঙ্গে ইইউ মিশনের বৈঠকের দিন ও এজেন্ডা এ সপ্তাহে চূড়ান্ত করা হবে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। ওই বৈঠকে বিএনপি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল কি না তা ইইউ মিশনটির কাছে ব্যাখ্যা করবে।
'সফররত প্রতিনিধিদলটি একটি প্রাক-মূল্যায়ন দল। এটির দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে ইইউ ঠিক করবে এটি দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না,' বলেন তিনি।
আগামী ১১ জুলাই সকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইইউ নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশনের বৈঠকের কথা রয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনসূত্রে জানা গেছে।
এ মিশনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেলেরি রিকার্ডো। ঢাকা ও ব্রাসেলসের একাধিক কূটনৈতিকসূত্র বলছে, ইইউ'র নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন বিএনপিসহ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে তুমুল আগ্রহী।
অতি সম্প্রতি ঢাকায় ইইউ'র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। ওসব সাক্ষাতে তারা ইইউ'র নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশনের ঢাকা সফরের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিলেন বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়।
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইংয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ রফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই মিশনের কাজ হবে মূল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের পরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, সরবরাহ ও নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা।
আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সফর করা এ প্রতিনিধিদলের মধ্যে আছেন দিমিত্র ইওয়ানু, আলভেস ক্রিটিনা ডস রামোস, মিলার ইয়ান জেমস, শ্যামেন ক্রিস্টোফার ও ম্যারি-হেলেন এন্ডারলিন।
দলটি ঢাকায় এর কার্যক্রমের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি বলে জানিয়েছে একটি কূটনৈতিক সূত্র।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন (ইওএম) পাঠানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ঢাকায় ইইউ মিশন-এর তথ্য অনুসারে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ইইউ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের 'পরামর্শযোগ্যতা, উপযোগিতা এবং সম্ভাব্যতা' মূল্যায়ন করাই এর মূল উদ্দেশ্য।