অনিয়ন্ত্রিত ৬৫ হাজার দেশীয় নৌযান নিবন্ধনের উদ্যোগ
অচিরেই নিবন্ধনের আওতায় আসছে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার হওয়া ৬৫ হাজার দেশীয় নৌযান।
দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি কাঠের নৌযানকে বলা হয় আর্টিশনাল নৌযান। এসব নৌযানের ধারণক্ষমতা ১৫ টনের নিচে। দেশে বর্তমানে কী পরিমাণ আর্টিশনাল নৌযান রয়েছে, তা জানে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর। তবে জেলেদের হিসাবে এর সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার।
নিবন্ধন না থাকায় এসব নৌযান দিয়ে মাদক কারবারি, দস্যুতা ও চোরাচালানের অভিযোগও রয়েছে। এসব অপরাধ সংঘটিত হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এবার ছোট এসব দেশীয় নৌযান গণনা করে নিজেদের অধিভুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের তথ্যমতে, সমুদ্রে মাছ ধরায় নিয়োজিত আছে বাণিজ্যিক ট্রলার, যান্ত্রিক নৌযান ও আর্টিশনাল নৌযান। এই তিন ধরনের নৌযান দেশের ১৪টি উপকূলীয় জেলা এবং ৬৭টি উপজেলার নদী ও সাগরে চলাচল করে। দেশে নিবন্ধিত নৌযানের মধ্যে বাণিজ্যিক ট্রলার ২৩১টি ও যান্ত্রিক নৌযান ২৮ হাজার ৫০০টি। তবে আর্টিশনাল নৌযানগুলোর নিবন্ধন নেই। ফলে এর প্রকৃত সংখ্যাও জানা নেই।
সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত সাগরে ৪০ মিটার গভীরতার মধ্যে এসব নৌযান চলাচল করে। অনিবন্ধিত হওয়ায় সাগরে নৌযান চলাচলে বিধিনিষেধ মানছে না নৌযানগুলো। বিশেষ করে সাগরের তীর থেকে ১০ মিটারের মধ্যে মাছ ধরায় বিধিনিষেধ আছে। এই স্থানকে মাছের প্রজনন স্থান বলা হয়। নিবন্ধিত নৌযানগুলো এই বিধিনিষেধ মানলেও অনিবন্ধিত নৌযানগুলো বিধিনিষেধ মানছে না। ফলে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া যায় না।
এছাড়া মাছ ধরার নামে মাদক কারবারি, দস্যুতা-ডাকাতি এবং চোরাচালানও করা হয় এসব অনিবন্ধিত নৌযান ব্যবহার করে। নিবন্ধন না থাকায় নৌযানগুলো অনেকসময় খুঁজেও পাওয়া যায় না। এসব কারণে নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে।
সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'মৎস্য সম্পদ উন্নয়নবিষয়ক একটি প্রকল্পের গণনার কাজ চলছে। দেশের টেকনাফ থেকে সুন্দরবনের পশ্চিম পয়েন্ট পর্যন্ত ৭১০ কিলোমিটার কোস্ট লাইনের সবকটি উপজেলায় গণনা চলছে। আরও দুই বছর রয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। আশা করছি, এর আগেই গণনার কাজ শেষ হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রাথমিকভাবে আর্টিশনাল নৌযানগুলোকে তিন বছরের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমাদের জানা থাকবে, কী পরিমাণ নৌযান আছে, কী পরিমাণ মৎস্য আহরণ হচ্ছে।'