বায়তুল মোকাররমে বিপুল নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে চলছে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ
বিপুল নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জাতীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ-এর শান্তি সমাবেশ।
শুক্রবার বেলা সোয়া দুইটার পর বৃষ্টি থামলে শুরু হয় এই আয়োজন। এ সময় কণ্ঠ ও আবৃত্তিশিল্পীরা তাদের উপস্থাপনা পরিবেশন করেন।
পরে ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও ভগবদগীতা পাঠ করা হয়।
জুমার নামাজের পর বৃষ্টি নামলে কিছুটা ছেদ পড়ে সমাবেশস্থলে। নেতাকর্মীরা আশেপাশের স্টেডিয়াম মার্কেট ও গুলিস্তানের বিভিন্ন দোকানের সামনে অবস্থান নেন। বৃষ্টি থামার পর মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীরা ছবি তোলেন। এসময় মঞ্চে বাজে পূর্বে রেকর্ডকৃত মুক্তিযুদ্ধের গান 'জয় বাংলা, বাংলার জয়'। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী আশরাফ উদাস। তার সঙ্গে বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয় সুরের তালে তালে। এ সময় নেতাকর্মীরা নিজ সংগঠনের পতাকা উড়িয়ে, নেচে মেতে ওঠেন।
এরপর শামসুর রহমানের 'আমার পরিচয়' কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিকার মাইদুল ইসলাম। সংগীত পরিবেশন করেন দেলোয়ার হোসেন বয়াতী। শাহ আব্দুল করিমের গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
এর আগে শুক্রবার দুপুর একটার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। দুপুর ২টা ১৫ মিনিট থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সমাবেশকে ঘিরে আগে থেকেই বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
বেলা ২টার পর থেকে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট ও এর আশপাশের এলাকা সমাবেশস্থল মিছিলে মিছিলে ভরে যেতে শুরু করে।
দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান তার কর্মীদের নিয়ে শান্তি সমাবেশে যোগ দেন।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ শান্তি সমাবেশের সভাপতিত্ব করছেন।
এছাড়াও মঞ্চে আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৬ ফুট প্রস্থের মঞ্চে অবস্থান করছেন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখবেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু সমাবেশে বলেন, "বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে আছে। বিএনপি, জামায়াত সারাদেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আমাদের নীরবতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। আপনারা আবার জ্বালাও-পোড়াও করলে আমরা প্রতিহত করবো।"
তিনি আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ চাইলে বিএনপি ১০ মিনিটও রাজপথে টিকে থাকতে পারবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। সকলের মিছিল-মিটিং করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি মিছিল-মিটিংয়ের নামে অশান্তি, অরাজকতা তৈরি করে, তাদেরকে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ প্রতিরোধ করবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।"
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, "ছাত্রসমাজ কালোহাত গুঁড়ো করে দেয়ার জন্য প্রস্তুত। বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না। নৌকার বিজয় নিয়ে আমরা ঘরে ফিরবো।"
ঢাকা মহানগর ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের নেতাকর্মীরা এবং ফেনী, বরগুনাসহ আরও কয়েকটি জেলার নেতাকর্মীরা যোগ দিয়েছেন শান্তি সমাবেশে।
এদিকে আজকের মহাসমাবেশকে সামনে রেখে নয়াপল্টনেও দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতাকর্মীরা।
সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সরকারের পদত্যাগের স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
প্রসঙ্গত, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলই বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ তাদেরকে কাঙ্ক্ষিত স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি।
রাজধানীতে সমাবেশ করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলকে একই শর্ত মানতে হবে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি আরও বলেন, সমাবেশে কোনো সহিংসতা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।